পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২০.djvu/৩৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৭শ বর্ষ, দশম সংখ্যা শিবাজী তুকারামের নিম্পূহত ও অচলা দেবভক্তি দেখিয়া চমৎকৃত হইলেন । মহীপতি বলেন যে, মহারাজা তুকাবামের সাধু দৃষ্টান্ত ও সংসর্গগুণে সংসারের প্রতি এরূপ বীতরাগ হইয়াছিলেন যে, তিনি রাজকাৰ্য্য পরিত্যাগ করিয়া অরণ্যবাসে কালহরণ করিতে লাগিলেন। শিবাজীর মাতা ঠাকুরাণী জিজাবাই এষ্ট বৃত্তান্ত শ্রবণ করিবামাত্র ব্যাকুল অস্তরে তুকারামের নিকট গমন করিয়া আপনার পুত্রটিকে সন্ধুপদেশ দ্বারা সংসারে ফিরাইয় আনিবার জন্ত বিস্তর মিনতি করিলেন । তুকারাম তাহাকে আশ্বাস দিয়া কহিলেন— “ভয় নাই, তোমার মনস্কামনা পূর্ণ হইবে ।” রাত্রিকালে সঙ্কীৰ্ত্তনের সময় শিবাজী রাজা সমাগত হইলে অবসর বুঝিয়া তুকারাম র্তাহীকে এইরূপ উপদেশ দিলেন যে, যাহার যে ধৰ্ম্ম তাহার তাহ পালন করা কর্তব্য । প্রজাপালন ক্ষত্রিয় ধৰ্ম্ম,অতএব মহারাজ তাহাই অনুষ্ঠান করুন। সে ধৰ্ম্ম পরিত্যাগ করিয়া সন্ন্যাস অবলম্বন করা মহারাজের পক্ষে কোন ক্রমেই কৰ্ত্তব্য নহে । এই উপদেশ গীতোক্ত ধৰ্ম্মের অনুযায়ী “স্বধৰ্ম্মে নিধনং শ্রেয়ঃ পর ধৰ্ম্মে৷ ভয়াবহঃ । শ্ৰীকৃষ্ণের উপদেশে যেমন অর্জুনের, ইহাতে সেইরূপ শিবাজীর চৈতন্ত হইল । তাহার বিষয় বৈরাগ্য দূৰ হইল, তিনি স্বীয় কর্তব্য বুঝিতে পারিয়া তাহার মাতার সঙ্গে স্বরাজ্যে প্রত্যাগমনপূৰ্ব্বক পুনরায় রাজ্যভার গ্রহণ করিলেন। শিবাজীর প্রতিভাবলে যে মহারাষ্ট্র রাজ্যের পত্তন হয়, তাহ অনতিকাল মধ্যেই ভারতবর্ষে প্রাধান্য লাভ করিল। কিন্তু শিবাজীর ংশজ রাজগণের মধ্যে কেহই তাহার পদ আমার বোম্বাই প্রবাস Σ) ο Αθ মৰ্য্যাদা রক্ষা করিতে পারে নাই । তাহার পুত্র শম্ভোজী ব্যসনাসক্ত নিতান্ত অকৰ্ম্মণ্য ছিলেন। সঙ্গমেশ্বরে আমোদ প্রমোদে মত্ত আছেন, এমন সময় জনৈক মোগল সর্দার সন্ধান পাইয় তাহাকে বন্দী করিয়া ঔরঙ্গজীবের নিকট ধরিয়া আনে। শম্ভোঞ্জীর প্রাণ রক্ষার্থে বাদসাহকে অনেক অনুরোধ করাতে সম্রাট বলিয়া পাঠাইলেন, “তোর জীবন মরণ তোর আপনারই হাতে । যদি মুসলমান ধৰ্ম্ম গ্রহণ করিস তবেই তোর প্রাণ রক্ষা, নতুবা জল্লাদের হাতে তোর প্রাণ দগু হইবে।” শম্ভোজী উত্তর করিলেন, “বাদস যদি আপনীর কস্তাকে আমার সঙ্গে বিবাহ দিতে রাজী হন, তাহলে আমি মুসলমান হই ।” এই উত্তরে ঔরঙ্গজীব ক্রোধান্ধ হইয়া শম্ভোজীর প্রাণদণ্ডের আদেশ করিলেন। পেশওয়া বালাজী বিশ্বনাথ ১৭১৪ শম্ভে{জীর পুত্র সাহু শৈশবকালে ঔরঙ্গজীবের হস্তে পড়িয়া অনেক বৎসর কারা বাস ভোগ করেন। বাদসার মৃত্যুর পর তিনি মুক্তিলাভ করিয়া স্বরাজ্য ফিরিয়া পান কিন্তু মোগলদের মধ্যে সুদীর্ঘ কারাবাস প্রযুক্ত র্ত্যহাতে আর কোন পদার্থ ছিল না। নিজে রাজকাৰ্য্য পরিচালনে অক্ষম, সুতরাং ক্রমে সমস্ত রাজ্যভার সচিব প্রধান পেশওয়ার হস্তে সন্ন্যস্ত হইল । প্রথম পেশওয়া বালাজী বিশ্বনাথ । ১৭১৪ সালে বালাজী প্রধান মন্ত্রীপদে প্রতিষ্ঠিত হইয়া ক্রমে নৃপতিকে অতিক্রম করিয়| উঠিলেন । " পেশওয়া পদ র্তাহার বংশানুগামী হইল । সাহু কেবল নামে ছত্রপতি, পেশওয়াই আসল রাজা ।