পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২০.djvu/৩৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৭শ বর্ষ, দশম সংখ্যা প্রকাশ পাইতেছিল । সমুখে যে আসন্ন মৃত্যু মুখবাদান করিয়া রহিয়াছে—তাহারা যেন সে বিষয়ে একেবারেই অনভিজ্ঞ। আলোটা মখন ঘুরিয়া তাহদের মুখের উপর পতিত হইল—আমরা তার হইতে লক্ষ্য করিলাম সেই পাথরে কোদা মূৰ্ত্তিগুলির মাথায় প্রকাগু হরিদ্রাভ বস্ত্রের পাগড়ী এবং তাহাদের উন্নতদেহ, সুদীর্ঘ নাসিক, কৃষ্ণতার চক্ষু, উজ্জ্বলবর্ণ সমস্তই প্রাচ্য দেশীয়ের পরিচয় জ্ঞাপক। অবশু আমাদের তখন পুঙ্খানুপুঙ্খরুপে সমস্ত বিষয় লক্ষ্য করিবার অবসর ছিল না—শুধু চকিত দৃষ্টিপাতে যতটুকু দেখিয়া লওয়া সম্ভব,—কেবল ততটুকুই আমরা দেখিয়া লইয়াছিলাম । জাহাজখানা চূর্ণ হইতে আর বড় বিলম্ব নাই। অৰ্দ্ধমৃত আরোহীগণের রক্ষার জন্তই আমরা মনোয়োগী হইলাম। সৰ্ব্বাপেক্ষা নিকটবৰ্ত্তী স্থানে যে লাইফ বোট থানা আছে –সেও –এখান হইতে দশ মাইল দূরে বে অফ লিউমে ? কিন্তু ঐ সমুদ্রের বেলাভূমে বন্দরের উপর যে প্রকাগু জেলেবোটখানা পড়িয়া আছে—ইহাকে ইচ্ছ। করিলে কাজে লাগাইয়া লওয়া যায়। আমরা ছয় জনে দাড় লইয়। নৌকাখানার উপর চাপিয়া বসিলাম—বাকী কয়জনে তাহাকে ঠেলিয়া জলে নামাইয়া দিল । ক্রদ্ধ সমুদ্রের ঢেউয়ের সহিত প্রাণপণ শক্তিতে যুদ্ধ করিতে করিতে আমরা বিপন্ন জাহাজ থানার দিকে অগ্রসর হইলাম । আমরা যখন প্রকাও প্রকাগু তরঙ্গের মাথার উপর আসিয়া পড়িলাম মনে হইল बूकि गंकण ८घ्रष्टाहे ठू५| श्हेब्र माग्न । সোধ-রহস্য 43ళి দেখিলাম--যেমন মেষপালক তাহার মেৰ বৃন্দকে তাড়াইয়া আসে তেমনি করিয়া বন্ধউজ্জল তরঙ্গস্রোতকে তাড়াইয়া লইয়া একটা প্রকাওকায় দৈত্যের মত পৰ্ব্বতাকৃতি উত্তাল তরঙ্গ সবেগে ছুটিয়া আসিতেছে। আলাদিনের আশ্চৰ্য্য প্রদীপপ্রদাতা বোতলবদ্ধ দৈত্যটা বুঝি মুক্তি পাইয়া আজ তাহার দীর্ঘ জীবনের বন্দীত্বৈর রুদ্ধ রোষ এক মুহূর্তে মিটাইয়া দিয়া স্বষ্টির চিন্তু লোপ করিয়া দিবে ! দেখিতে দেখিতে তরঙ্গটা ঘোর শব্দে জাহাজের উপর আছাড়িয়া পড়িল । তার পর অনন্ত উৰ্ম্মিরাশি;—তরঙ্গের উপর তরঙ্গের আঘাত জাহাজ খানাকে একেবারে আক্রমণ করিল। চোরা পাহাড়ের শৃঙ্গের মুখগুলা তীক্ষ্ণধার, এবং তাহার মধ্যে মধ্যে ক{ট । জাহাজ থান —দুই ধারের দুই খান করাতের ন্তাল্প শৃঙ্গের মধ্যস্থলে পড়িয়াছিল, প্রকাও প্রকাও বরফের আঘাতসংঘর্ষে শৃঙ্গগাত্রে চিরিয়া সেখান একেবারে দ্বিধাবিভক্ত হইয়া গেল। পশ্চাতের খণ্ডটা তাহার পতাকা চিহ্ণিত মাস্তুল আর সেই তিন অসাধারণ বিদেশী আরোহকে লইয়া মুহূৰ্ত্ত মধ্যে গভীর জলতলে অদৃগু হইয়া পড়িল। আর সন্মুখ ভাগটা মৃতকল্প আরোহীদের লইয়া মৃত্যু প্রতীক্ষায় পৰ্ব্বতগাত্রে সংলগ্ন রহিল । জাহাজ ভাঙ্গার শব্দের সহিত তরঙ্গের ও হতভাগ্য আরোহীদের হৃদয় বিদারক ষে হাহাকার ধ্বনি মিলিত হইল তাহ মৰ্ম্ম বিদারক ; তীরে তীরে তাহার প্রতিধ্বনি বাজিয়া উঠিল । আমরা রুদ্ধ নিশ্বাসে অবর্ণনীয় বেদনার সহিত তাছা গুলিতে লাগিলাম ।