পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২০.djvu/৩৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৭শ বর্ষ, দশম সংখ্যা ক্ষণে পরিবর্তিত মুখভাবের প্রতি সকৌতুক কটাক্ষে চাহিয়া চাহিয়া মনে মনে একটু আনন্দ উপভোগ করিতেছিলাম। তিনি কহিলেন “কাপ্তেন ! আমি আপনার সাম্নেই মাঝিদের জিজ্ঞাসা করেছিলুম—কেন তারা ও রকম কল্পে ? তাতে—তারা উত্তর দিয়েছিল যে “ওনারা, সাধু সন্ন্যাসী ?” তাৰ যে “সাধু সন্ন্যাসী" এ কথা বে:ধ হয় আপনি নিজের কানেই শুনেছিলেন ?” কাপ্তেন মেডোজ সহান্ত মুখে চুকটের ছাই ঝাড়িতে ঝাড়িতে উত্তর দিলেন “ভাল !— আমি ত অস্বীকার কচি না, কিন্তু সেজন্ত ক্ষতিটা কি হয়েছে শুনি ? “কি—যে হয়েচে তা আমি কেমন করে বলব ? সবচেয়ে সাধু কৃশ্চান যে, সে ভগবানের সবচেয়ে কাছে যায়—আর সবচেয়ে সাধু নগার সয়তানের কোলের কাছে দাড়ায়,—- আমার ত এই বিশ্বাস —তার পর কাপ্তেন মেডোজ, আপনি দেখেচেন তাব বই পড়ত— কিন্তু সে কাঠের বই—? মাঝ রাত্তির পর্য্যন্ত বাইরে ডেকের উপর হিমে বসে কি সব বিড় বিড় করে উচ্চারণ কর্ত, মন্ত্র-তন্ত্র কিছু হবে। তার পর তাদের ম্যাপ ? জাহাজ কোথা দিয়ে যাচ্চে, কি কচ্চে—সে খবরে তাদের দরকার ? তারা রোজ রোজ ম্যাপে দাগ দিত কেন ?” কাপ্তেন মুখ ফিরাইয়া সিগারেটের ধূম ছাড়িয়া দিয়া গম্ভীর ভাবে কহিলেন “নাঃ,— এসব তারা কিছু করত না ।” “হা,-আলবৎ কর্ত,—আপনাকে কেন এ সব কথা বলিনি ? বল্পে আপনি বিশ্বাস করতেন কিনা ? তর্ক করে উড়িয়ে দিতেন,—বরাবরই সৌধ-রহস্ত ১০৯৭ ত তাদের উপর আপনার অকারণ স্নেহ দেখে আসচি!” অভিমানে তাহার কণ্ঠস্বর বুজিয়া আসিতেছিল “তাঁদের—নিজেদের সব যন্ত্রপাতি ছিল —আর কখন যে সে সব তারা ব্যবহার কর্ত—তা যদিও আমি জানি না,— চোখেত কিছু দেখিনি, কিন্তু প্রতি ‘দিন দুপুর বেলা “ল্যাটিচুড ” “লংগীচুড” ঠিক করে তাদের কেলিনের টেবিলের উপরকার পিন আঁটা ম্যাপখানাতে দাগ টেনে টেনে জাহাজের গতি নিরূপণ যে করত, আমি ঠিকৃ ধরেছিলুম। কাপ্তেন একটু চিন্তিত মুখে উত্তর দিলেন, “বেশ ! আমি স্বীকার কচ্চি—এ সব খুব আশ্চৰ্য্য, কিন্তু এ থেকে তুমি কি যে প্রমাণ করতে চাচ্চ,—তাত বুঝতে পাচ্চি না।” সহকারী একটু বেগের সহিত কহিলেন, “আর একটি কথা আমি বল্ব —এই যে উপসাগরটার উপর আমরা এসে পড়েচি এর নাম কি জানেন ?” কাপ্তেন সংক্ষেপে উত্তর দিলেন “না” । সহকারী তাহার মেঘাবৃত মুখখানাকে আরো গম্ভীর করিয়৷ কাপ্তেনের দিকে একটু অগ্রসর হইয়া কণ্ঠস্বরকে যথেষ্ট গম্ভীর করিয়া তুলিয়া পরিস্কার ভাষায় উচ্চারণ করিলেন "কার্ক-মেডেন-উপ—সাগর” ! যদি কাপ্তেনকে আশ্চৰ্য্য করিয়া দেওয়াই তাহার উদ্দেশ্য থাকে, তাহা হইলে আমি নিঃসংশয়ে বলিতে পারি যে র্তাহার সে উদেশ্য সম্পূর্ণ রূপেই সিদ্ধ হইয়াছিল। সুগভীর বিস্ময়ে ধীরে ধীরে মেডোজ কছিলেন “বাস্তবিকই ঘটনাটি যে অত্যন্ত আশ্চৰ্য্যঞ্জনক