পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২০.djvu/৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

אט ה* আগলাইয়। রাখিয়াছিল । বিবেকের শাসন মন মানিতে রাজি হয় না, সে প্রবলম্বরে কেবলই বলে ‘কেন আমি এ সুযোগ প্রত্যাখ্যান কবিব ? কেন আমি নিজের ধৰ্ম্মরক্ষা করিব না ? আমি তো চেষ্টা করি নাই, যদি’. এইখানেই একটা খটকা বাধিয়া যায় !...কি বলিবে—যদি ঈশ্বর সুযোগ দিয়াছেন ? ঈশ্বর কে ? সেতে তাহাকে কখনও চিনে নাই ডাকে নাই, আছেন কি না তাহাতেও সংশয় করিয়া আসিয়াছে, তবে এ কি দৈব ? অদৃষ্ট ? কে তাহাকে আজ এ সুযোগ দান করিল? আচ্ছ সে যেই হউক না কেন তাঁহাতে কি ! কেন সে তাহার দীন গ্ৰহণ কহিবে না ? সন্ধ্য রাত্রিতে পরিণত হইয়াছিল, রাত্রি গভীরতর হইতে লাগিল। বিকট হুঙ্কার ছাড়িয়া ডেলি-পেসেঞ্জার গুলা আফ্রিসের বাবুদের গৃহে ফিরাইয়া দিয়া গেল। ষ্টেশন ক্রমেই জনশূন্ত হইতে হইতে শেষকালে একটা সময়ে একেবাবে নিঃসাড়া হইয়া আসিল । বাহিবের গাছের মধ্যে তীব্র স্বরে ঝি ঝি ডাকিতে লাগিল । কোয়াসার একখান পাতলা ওড়না নৈশ প্রকৃতির অঙ্গ আচ্ছাদন করিয়া ধীরে ধীরে নামিয়া আসিল, তাহার মধ্যবৰ্ত্তী ক্ষীণ নক্ষত্ৰলোক সূক্ষ্ম বসনান্তবালে সুন্দরীর অঙ্গলাবণ্যবৎ অৰ্দ্ধ বিকসিত হইয় উঠিতেছিল। কেবল গাছপালাব অসংখ; জোনাকীর ঝিকমিকানি যেন তাহারি নিশ্বt. প্রশ্বাসভরে কম্পিত হীরক দুলের মত থাকিয়| থাকিয়া ঝকিয়া উঠিতে লাগিল । সেই প্রবল শীত হিম নিদ্রালস্ত উপেক্ষ কবিয়া শচীকান্ত তেমনই ভারতী কাৰ্ত্তিক, ১৩২• নিস্তব্ধ বসিয়া রহিল, এবং তfহtর মনের মধ্যে তেমনই ভীষণ বেগে ঝটিকা বহিতে লাগিল । প্রবল আক্রমণের বেগে থাকিয়া থাকিয়৷ মাথাব মধ্যে ঘূর্ণবৰ্ত্ত স্বজিয়া উঠিতেছিল, ধমনী মধ্যস্থ শোণিতে উন্মত্ত তরঙ্গ চুটিয়া ফিরিতেছিল ! ষ্টেশনের মধ্যে লোকজন অল্পই ছিল, কুলী দুইটা একটা চট মোড়া মাল ঠেলিয়া আনিয়া তাহার গায়ে ঠেস দিয়া চুলিতেছিল। আলো গুলা নিবাইয়া দেওয়া হইয়াছে কেবল একটি মাত্র ল্যাম্প মিট মিট করিয়া জলিতেছিল, ভোর পর্য্যন্ত আর কোন গাড়ি আসিবার কথা নাই । শচীকান্ত ভাবিতে ভাবিতে একবার আলোটার দিকে চাহিয়াই দৃষ্টি ফিরাষ্টয়া লইল । হঠাৎ যেন মনে হইল সেই আলোকে কেহ তাহার হৃদয়ের অন্তঃস্থল অবধি তীক্ষ্ণদৃষ্টি দ্বারা উলটিয়া দেখিতেছে। সে আলোকের দিকে পশ্চাৎ করিয়া বসিল । কিন্তু ছায় সেই অদৃশু দর্শকের অন্তর্বিদ্ধকারী দৃষ্টি হইতে সে নিজেকে লুকাইতে পারিল কই ! এদিকের মৃত্যু অন্ধকারে তাহারই দুই নেত্র অনলউদগাবণ করিয়া যুক্ততারকার আকারে চোখের উপব দুই ভৎসনা দৃষ্টি স্থির করিয়া রাখিল। শচীকান্ত শিহরিয়া দুই চোখ মুদ্রিত করিয়া বেঞ্চের পিঠে মাথা রাখিল । সে দৃষ্টি যেন তাহার পিতার অচঞ্চল গাম্ভীৰ্য্যপূর্ণ নেত্ৰ যুগল স্মরণ করাইয়া দেয় । সে আবার মনে মনে বলিল, -যেন সেই দৃষ্টির উদ্দেশে নিজেকে সাফাই করিতে গিয়া বলিল, আমার দোষ কি ? আমিতে পাপ করিতেছি না, কাহাব ও কোন ক্ষতি করিতেও ইচ্ছুক নই তবে এত সঙ্কে{চই বা কিসের ? *