পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২০.djvu/৩৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৭শ বর্ষ, দশম সংখ্যা আর আমাদের নিত্য কাজই হচ্ছে তর্জম করা । কিন্তু সব্যসাচী হলেও এক তীরে দুই পার্থী মেরে উঠতে পারি নে। আমরা যখন বাঙ্গল লিখি তখন ইংরেজির তজম করি, কিন্তু সে না জেনে ; আর যখন ইংরেজি লিখি তখন বাঙ্গলার করি, সেও না জেনে । কিন্তু এখন থেকে ঐ কাজই আমাদের সজ্ঞানে করতে হবে মুস্কিল ত ঐ খানেই। মনোভাবকে প্রথমে বঙ্গলা ভাষার কাপড় পবাতে হবে, এই মনে রেখে যে আবাব তাকে সে কাপড় ছাড়িয়ে ইংরেজি পোষাক পরিয়ে Swedish Academyর সুমুখে উপস্থিত করতে হবে । এবং এব দরুণ মনোভাবটীব চেহারাও এমনি ত’য়ের করতে হবে, যে শাড়ীতেও মানায় Gown as xiăţi এক ভাষাতে চিন্তা করাই কঠিন, কিন্তু একসঙ্গে, যুগপৎ, দুটি ভাষাতে চিন্ত৷ করাটা অসম্ভব বল্পেও অত্যুক্তি হয় না । কিন্তু কায়ক্লেশে আমাদের সেই অসাধ্য সাধন করতেই হবে। একটি বাঙ্গালী আর একটি বিলাতি এই দুটি স্ত্রী নিয়ে ংসার পাতা যে আরামের নয়, তা যার ভুক্তভোগী নন তারাও জানেন । তা ছাড়া এ উভয়ের প্রতি সমান আসক্তি না থাকূলে এ দুই সংসার করাও মিছে। সৰ্ব্বভূতে সমদৃষ্টি চাইকি মানুষের হতেও পারে, কিন্তু দুটি পত্নীতে সমান অনুরাগ হওয়া অসম্ভব, কেননা মানুষের চোখ দুটি হলেও হৃদয় শুধু একটি । স্ত্রৈণ হতে হলে একটি মাত্র স্ত্রী চাই। এমন কি, দুই দেবীকে পূজা করতে হলেও পাল করে করা ছাড়া উপায়ান্তর گا۔-- তজমা নোবেল প্রাইজ Yo on নেই । অতএব দাড়াল এই যে, বছরের অৰ্দ্ধেক সময় আমাদের বাঙ্গলা লিখতে হবে আর অৰ্দ্ধেক সময় ইংরেজিতে তার তরজমী করতে হবে। ফিরেফিরতি সেই Swedenএর কথাই এল। অর্থাৎ আমাদের চিদাকাশে ছমাস রাত আর ছমাস দিনের স্বষ্টি করূত্তে হবে, অথচ দৈবশক্তি আমাদের কারও নেই । • তৃতীয় মুস্কিল এই যে, সে তজমার ভাষা চলতি হলে চলবে না । সে ভাষা ইংরেজি হওয়া চাই অথচ ইংরেজের ইংরেজি হলেও হবে না । দেশী আত্মা এমনি ভাবে বিলাতি দেহে প্রবেশ করিয়ে দেওয়া চাই, যাতে তার পুৰ্ব্বজন্মের সংস্কারটুকু বজায় থাকে । ফুল ফোটাতে হবে বিলেতি কিন্তু তার গায়ে গন্ধ থাকা চাই দেশী কুঁড়ির। প্রজাপতি ওড়াতে হবে বিলেতি কিন্তু তার গায়ে রং থাকা চাই দেশী পোকার। এক কথায় আমাদের পূর্বের স্বৰ্য্য পশ্চিমে ওঠাতে হবে । এহেন অঘটন-ঘটন-পটিয়সী বিদ্যা অবশ্য আমাদের নেই । কাজেই যে কাৰ্য্য আমরা একদিন বাঙ্গলীয় করতে চেষ্টা করে অকৃতকাৰ্য্য হয়েছি-রবীন্দ্রনাথের লেখার অনুকরণ - তাই আবার দোকর করে ইংরাজিতে করতে হবে । ইউরোপে আসল জিনিষটি গ্রাহ্য হচ্ছে বলে নকল জিনিষটিও মে গ্রাহ্য হবে, সে অাশা দুরশি মাত্র । ইউরোপ এদেশে মেকি চালায় বলে’, আমরাও যে সে দেশে মেকি চালাতে পারব এমন ভরসা আমার নেই। ফলে আমরা সাদাকে কালে, আর কালোকে সাদা যতই কেন করি না,—