পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২০.djvu/৩৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৭শ বর্ষ, দশম সংখ্যা কথা-ৰ্তাহার বিশেষ ভাবে উপলব্ধি করা ঈশ্বরের কথা বলিতেন, সে তখন সেদিকে মন না দিয়া বিশেষ একাগ্রতা সহকারে আকাশ তৃণ ও পুষ্পের দিকে চাহিয়৷ থাকিত । মধ্যে মধ্যে পতঙ্গের অনুসরণে ছুটিয়া যাইত, তাঁহার পর পতঙ্গ হাতে ধরিয়া র্তাহার নিকট ফিরিয়া আসিয়া বলিত,— “কেমন সুন্দর এটি দেখ মামা ! আহ, আমার ইচ্ছে করে একটা চুম খাই!” পতঙ্গ বা পুষ্পকে এই চুম্বন দানের আকাজ পুরোহিতকে ক্ষুব্ধ, উত্তেজিত ও ক্রুদ্ধ করিয়া তুলিত । রমণীহৃদয়ের যে প্রেমের ফন্তু চিরদিন বহিয়া যাইতেছে পুরোহিতের নিকট প্রকারাস্তরে ইহা তাঁহাই প্রমাণ করিয়া দিত ! র্তাহার গৃহকত্রী, মঠের ধনরক্ষকের পত্নী একদিন অকস্মাৎ অতি গোপনে তাহাকে জানাইয়া দিল যে র্তাহার ভাগিনেয়ীর একজন প্রণয়ী আছে ! একথা শুনিয়া তাহার মন ভয়ানক ব্যগ্র হইয়া উঠিল বটে কিন্তু ঠিক সেই সময়ে তাহার দাড়ির উপর দিয়া ক্ষুর চলিতেছিল বলিয়া সে রাগটা তেমন করিয়া প্রকাশ পাইতে পারিল না। কথাটা শুনিয়া প্রথমে র্তাহার রাগে কণ্ঠ রোধ হইল ; পরে কথা কহিবার শক্তি ফিরিয়া আসিলে তীব্র স্বরে তিনি বলিলেন, —“এও কি কখন হ’তে পারে?—মলেনী, তুই মিথ্যা কথা ব’লছিল।” কৃষকরমণী আপনার বক্ষে হাত রাখিয়া বলিল,—“না পাদ্রী সাহেব, আমি মিথ্যা বলিনি, তা যদি ব’লে থাকি তবে পরমেশ্বর যেন তার বিচার করেন । নদীর ধারে তাদের চাদিম৷ >>>● মিলন হয়। রাত দশটা থেকে ছপুরের ভেতর সেখানে গেলেই, স্বচক্ষে সব দেখতে পাবেন । তিনি ক্ষৌরকর্ষ হইতে বিরত হইয়৷ ঘরের মধ্যে ক্রমাগত প্রচণ্ড বেগে পদচারণ। করিয়া বেড়াইতে লাগিলেন। একটা কিছু গভীর ভাবে চিন্তা করিতে হইলে তিনি • এইরূপ করিতেন। তাহার পর আবার যখন ক্ষুর ধরিয়া কামাইতে গেলেন তখন নাক হইতে কাণের মধ্যে তিন স্থানে ক্ষুর বসাইয়া ফেলিলেন । ঝড়ের পূৰ্ব্বে সমুদ্র যেমন স্থির গম্ভীর থাকে সেই ভাবে তিনি সারা দিনটা কাটাষ্টয়া দিলেন। এই সৰ্ব্বজয়ী প্রেমের উপর তাহার ধৰ্ম্মযাজক-সুলভ কোপের সহিত, পিতৃ-মুলভ কোপ ও আত্মার-রক্ষক ও অভিভাবক-সুলভ কোপ মুক্ত হইল ; তিনি যে প্রতারিত, ব্যর্থমনোরথ এবং বালিকার নিকট পরাস্ত হইয়াছেন এ চিন্তায় তিনি অত্যন্ত ব্যথিত হইলেন। বৃদ্ধ মাতাপিতার যখন কস্তার নিকট শুনেন যে র্তাহাদের অজ্ঞাতে, র্তাহাদের সাহায্য না লইয়াই উহাদের কন্যা আপনার স্বামী নিৰ্ব্বাচন করিয়াছে তখন তাহদের স্বার্থে ও আত্মসন্মানে যেরূপ আঘাত লাগে পুরোহিতমহাশয়ের আত্মসম্মানও এই সংবাদে সেইরূপ, আহত হইল । আহারাদি শেষ করিয় , তিনি পাঠে একটু মন দিতে চেষ্টা করিলেন কিন্তু কিছুতেই কৃতকাৰ্য্য হইতে পারিলেন না। রাগ তাছার ক্রমেই বাড়িয়া উঠিতে লাগিল । রাঞ্জি দশট বাজিলে তিনি আপনার ছড়িগাছটি