পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২০.djvu/৩৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৭শ্ব বর্ষ,দশম সংখ্যা ক্রমে ক্রমে একটা সন্দেহ, একটা অজ্ঞাত অস্বচ্ছন্দতা তাহাতে বিকশিত হইল। সময়ে সময়ে তিনি আপন মনে যে সকল প্রশ্নের সমাধান করেন তখন র্তাহীর মন সেইরূপ প্রশ্নে ভরিয়া উঠিল । ভগবান এমনটা করিলেন কেন ? রাত্রি যদি নিদ্রার জন্ত, বিশ্রামের জন্তই স্বঃ তবে তিনি ইহাকে দিনের চেয়ে এত রমণীয়, প্রভাত ও স্বৰ্য্যাস্ত অপেক্ষ এত মধুর, এত সুন্দর করিলেন কেন ? কেন এ নির্জনবিহারী অদ্ভুত উপগ্রহটকে তিনি স্বৰ্য্যাপেক্ষা এত অধিক কবিত্বময় করিয়া গড়িলেন, দিনের পূর্ণ আলোক যে সকল দ্রব্যকে রহস্যময়, সুকুমার বলিয়া প্রকাশ করিতে চাহে না-চন্দ্রীলোক যে তাঁহাকেও প্রকাশ করিয়াছে ! ছায়াগুলিকে স্বচ্ছ তরল করিয়া চাদ ওখানে উঠিল কেন ? অন্তান্ত পার্থীর মত শ্রেষ্ঠকলাবিদ বিহুগের এ সময় বিশ্রাম করে না কেন ?—তাহার পরিবর্তে রজনীকালে তাহারা বায়ুর উপর গানের মূর্ছনাই বা ছড়াইতে থাকে কেন ? মানুষ যদি রাত্রিতে নিদ্রায় অচেতন হইয়। রছিল তবে কাহার চিত্ত চরণের জন্ত এ সৌন্দৰ্য্যস্থষ্টি ? কাহার জন্ত এ উদার উন্মুক্ত দৃগু, স্বর্গের নন্দন হইতে মর্ত্যের উপর এ কবিত্ব-পারিজাত বৃষ্টি ? সন্ন্যাসী কোনমতেই এ প্রশ্নের সমাধান করিতে পারিলেন না । হঠাৎ যেন তাহার প্রশ্নের সমাধান হইয়া গেল। সন্ন্যাসী দেখিতে পাইলেন অদূরে তৃণাচ্ছাদিত মাঠের প্রান্ত ভাগে বিমল-চন্দ্রকর छैॉनिभां ১১১৭ স্নাত তরুমগুপের নিম্ন দিয়া দুইটি ছায়ামূৰ্ত্তি পাশাপাশি চলিতেছে ! অপেক্ষাকৃত দীর্ঘ মূৰ্ত্তিটি পুরুষের – তাহার হাতখনি প্রণয়িনীর কণ্ঠ বেষ্টন করিয়া রহিয়াছে। তাহদের চতুর্দিকস্থ প্রশান্ত ভূমিখণ্ড যেন তাহাদিগের পদম্পর্শে সজীব হইয়া দৈবপ্রেরিত দুর্ভেদ্য আবরণের মত তাহাদিগকে বহির্জগৎ হইতে রক্ষা করিতেছে । তাহারা দুইটিতে যেন এক আত্মা ;–আর তাহাদের জন্তই যেন এই শাস্ত সুন্দর রজনীর স্বষ্টি ! তিনি চিত্রাপি-তর দ্যায় স্থির হইয়া দাড়াইয়া রহিলেন । বক্ষের স্পন্দন স্পষ্টতর হইয়া উঠিল ; তাহীর মনে হইল, তিনি মেন কোন একটা স্বপ্নরাজ্যে বিচরণ করিতেছেন, তাহার নয়নের সম্মুখ দিয়া এ যেন সৰ্ব্বনিয়ন্তীর ইচ্ছ। ক্রমে সেই পবিত্র বাইবেল-বর্ণিত রুথ ও বুজের প্রেমাভিনয় চলিতেছে। তাহার সার মস্তিষ্কের মধ্য দিয়া বাইবেলের পবিত্র গাথা, সেই জ্বলন্ত কবিতাস্রোত ছুটয় বেড়াইতে লাগিল। তখন তিনি বলিয়া উঠিলেন,— “বুঝি মানবের প্রেম মায়াচ্ছাদনে আবৃত করিবার জন্তই ভগবান এমন সুন্দর রজনীর স্বষ্টি করিয়াছেন!” এই প্রেমিক যুগলকে তাহারই দিকে অগ্রসর হইতে দেখিয়া তিনি ক্রমে পশ্চাৎপদ হইতে লাগিলেন। তাহার পরই তিনি চিনিতে পারিলেন যুবতী তাহারই ভাগিনেী ! এইবার তাছার মনে হইল, বুঝি তিনি ভগবানের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কাৰ্য্য করিতেছেন । কারণ যে প্রেমকে তিনি এমন মহিমময় আবরণে বহির্জগতের নিকট হইতে আবৃত