পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২০.djvu/৪২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

3> అ8 অসীমের আরাধনা মনুষ্যত্বের কোনো অঙ্গের উচ্ছেদ সাধন নয় মনুষ্যত্বের পরিপূর্ণ পরিণতি। অনন্তকে একই কালে একদিকে আনন্দের দ্বারা অদ্যদিকে তপস্যার দ্বারা উপলব্ধি করতে হবে ; কেবলি রসে মজে থাকতে হবে না ; জ্ঞানে বুঝতে হবে, কৰ্ম্মে পেতে হবে ; তাকে আমার মধ্যে যেমন জানতে হলে তেমনি আমার শক্তিকে তার মধ্যে প্রেরণ করতে হবে। সেই অনন্তস্বরূপের সম্বন্ধে মানুষ একদিকে বলেছে আনন্দ হতেই তিনি যা-কিছু সমস্ত স্বষ্টি করচেন আবার আর একদিকে বলেছে স তপোহতপাত, তিনি তপস্যার দ্বারা যা-কিছু সমস্ত স্বষ্টি করচেন। এ দুই একই কালে সত্য। তিনি আনন্দ হতে স্বষ্টিকে উৎসারিত করচেন, তিনি তপস্তাদ্বারা সৃষ্টিকে কালের ক্ষেত্রে প্রসারিত করে নিয়ে চলেছেন । একই কালে তাকে তার সেই আনন্দ এবং তার সেই প্রকাশের দিক থেকে গ্রহণ ন৷ করলে আমরা চাদ ধরচি কল্পনা করে কেবল আকাশ ধরবার চেষ্টা করব । বহুকাল পূৰ্ব্বে একবার বৈরাগীর মুখে গান শুনেছিলুম, “আমি কোথায় পাব তারে, আমার মনের মানুষ যেরে !” সে আরো গেয়েছিল “আমার মনের মানুষ যেখানে, আমি কোন সন্ধানে যাই সেখানে।” তার এই গানের কথাগুলি আজ পর্য্যন্ত আমার মুনের মধ্যে ঘুরে বেড়াচ্চে। যখন শুনেছি তখন এই গানটিকে মনের মধ্যে কোনো স্পষ্ট ভাষায় ব্যাখ্যা করেছি তা নয় কিম্বা একথা আমার জানবার প্রয়োজন বোধ হয় নি যে, যারা গাচ্চে তারা সাম্প্রদায়িক ভারতী ফাল্গুন, ১৩২০ ভাবে এর ঠিক কি অর্থ বোঝে। কেন না, অনেক সময় দেখা যায় মানুষ সত্য ভাবে যে কথাটা বলে মিথ্যাভাবে সে কথাটা বোঝে । কিন্তু এ কথা ঠিক যে এই গানের মধ্যে মানুষের একটি গভীর অস্তরের কথা প্রকাশ হয়ে পড়েছে। মানুষের মনের মানুষ তিনিই ত, নইলে মানুষ কণর জোরে মানুষ হয়ে উঠচে ? ইহুদিদের পুরাণে বলেছে ঈশ্বর মানুষকে আপনার প্রতিরূপ করে গড়েছেন, স্কুল বাহ ভাবে এ কথার মানে যেমনই হোকৃ গভীরভাবে এ কথা সত্য বই কি । তিনি ভিতরে থেকে আপনাকে দিয়েইত মানুষকে তৈরি করে তুলেচেন ; সেই জন্তে মানুষ আপনার সবকিছুর মধ্যে আপনার চেয়ে বড় একটি কাকে অনুভব করচে । সেই জন্তেই ঐ বাউলের দলই বলেছে “খাচার মধ্যে অচিন পাখী কম্নে আসে যায়!” আমার সমস্ত সীমার মধ্যে সীমার অতীত সেই অচেনাকে ক্ষণে ক্ষণে জানতে পারচি, সেই অসীমকেই আমার করতে পারবার জন্তে প্রাণের ব্যাকুলত। আমি কোথায় পাব তারে, আমার মনের মানুষ যেরে ! অসীমের মধ্যে যে একটি ছন্দ দূর ও নিকটরূপে আন্দোলিত, যা বিরাট হৃৎস্পন্দনের মত চৈতন্তধারাকে বিশ্বের সর্বত্র প্রেরণ ও সৰ্ব্বত্র হতে অসীমের অভিমুখে আকর্ষণ করচে, এই গানের মধ্যে সেই ছন্দের দোলাটুকু রয়ে গেছে। অনন্তস্বরূপ ব্ৰহ্ম অন্ত জগতের অন্ত জীবের সঙ্গে অলপনাকে কি সম্বন্ধে বেঁধেছেন তা জানবার কোনো উপায় আমাদের নেই; কিন্তু এইটুকু মনের