পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২০.djvu/৪২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৭শ বর্ষ, একাদশ সংখ্যা ভিতরে জেনেছি যে মানুষের তিনি মনের মানুষ ;—তিনিই মানুষকে পাগল করে পথে বের করে দিলেন, তাকে স্থির হয়ে ঘুমিয়ে থাকৃতে দিলেন না। কিন্তু সেই মনের মতুযু ত আমার এই সামান্ত মানুষটি নয় ; তাকে ত কাপড় পবিয়ে, আহার করিয়ে, শয্যায় শুইয়ে, ভোগের সামগ্ৰী দিয়ে, ভুলিয়ে রাখবার নয়। তিনি আমার মনের মানুষ বটে কিন্তু তবু দুই হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলতে হচ্চে, “আমার মনের মানুষ কেবে, আমি কোথায় পাব তারে ?" সে যে কে তা ত আপনাকে কোনো সহজ অভ্যাসের মধ্যে স্থলরকম কবে ভুলিয়ে রাখলে জানতে পারবন!—তাকে জ্ঞানের সাধনায় জানতে হবে ; সে জানা কেবলি জানা, সে জানা কোনোখানে এসে বদ্ধ হবে না । “কোথায় পাব তারে?” কোনো বিশেষ নির্দিষ্ট স্থানে কোনো বিশেষ অনুষ্ঠানের মধ্যে ত পাওয়া যাবে না,—স্বাথবন্ধন মোচন করতে করতে মঙ্গলকে সাধন করতে করতেই তাকে পাওয়া —আপনাকে নিয়ত দানের দ্বারাই তাকে নিয়ত পাওয়া । মানুষ এমনি করেই ত আপন মনের মানুষের সন্ধান করছে—এমনি করেই ত তার সমস্ত দুঃসাধ্য সাধনার ভিতর দিয়েই যুগে যুগে সেই মনের মানুষ প্রত্যক্ষ হয়ে উঠচে, যতই তাকে সে পাচ্চে, ততই বলচে, “আমি কোথায় পাব তারে”। সেই মনের মানুষকে নিয়ে মানুষের মিলন বিচ্ছেদ একাধারেই ; তাকে পাওয়ার মধ্যেই তাকে না পাওয়া । সেই পাওয়া না-পাওয়ার নিত্যটানেই মানুষের নব নব ঐশ্বৰ্য্য লাভ, জ্ঞানের অধিকারের ব্যাপ্তি, কৰ্ম্মক্ষেত্রের প্রসার— ছোট ও বড় ১৯৬৫ এক কথায় পূর্ণতার মধ্যে অবিরত আপনাকে নব নব রূপে উপলব্ধি। অসীমের সঙ্গে মিলনের মাঝখানেই এই যে একটি চিরবিরহ আছে এ বিরহ ত কেবল রসের বিরহ নয়, কেবল ভাবের দ্বাবাই ত এর পূর্ণত হতে পাবে না ; জ্ঞানে কৰ্ম্মেও এই বিরহ ডাক দিয়েছে, ত্যাগের পথ দিয়ে মানুষ অভিসারে চলেছে। জ্ঞানের দিকে, শক্তির দিকে, প্রেমের দিকে যে দিকেই মানুষ বলেছে আমি চিবকালের মত পোঁচেছি, আমি পেয়ে বসে আছি, এই বলে যেখানেই সে তার উপলব্ধিকে নিশ্চলতার বন্ধন দিয়ে বাধতে চেয়েছে, সেইখানেই সে কেবল বন্ধনকেই পেয়েছে, সম্পদকে হারিয়েছে, সে সোনা ফেলে আঁচলে গ্রন্থি দিয়েছে। এই গান যে তার চিরকালের গান, “আমি কোথায় পাব তারে আমব মনের মানুষ যেরে ?” এই প্রশ্ন যে তার চিরদিনের প্রশ্ন —“মনের মানুষ যেখানে, বল কোন সন্ধানে যাই সেখানে?” কেননা সন্ধান ও পেতে থাকা একসঙ্গে ; যখনি সন্ধানের অবসান তখনি উপলব্ধির বিকৃতি ও বিনাশ । এই মনের মানুষের কথা বেদমন্ত্রে আরএক রকম করে বলা হয়েছে। তাকে বলেছে “পিতা নোহসি” তুমি আমাদেব পিতা হয়ে আছ। পিতা যে মানুষের সম্বন্ধ-কোনো অনন্ত তত্ত্বকে ত পিতা বলা যায় না । অসীমকে যখন পিতা বলে ডাকা হল তখন তাকে আপন ঘরের ডাকে ডাকা হল ; এতে কি কোনো অপরাধ হল, এতে কি সত্যকে কোথাও খাটো করা হল ? কিছু মাত্র না। কেননা আমার ঘর ছেড়ে তিনি ত শূন্ততার মধ্যে লুকিয়ে নেই। আমার ঘরটিকে তিনি