পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২০.djvu/৪৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৭শ বর্ষ, একাদশ সংখ্যা র্তাহারা পৃথক হইলেন। রাজধানীর দক্ষিণে পুরাতন সহরটাতে বেগ তাবু ফেলিলেন । রোহিলা এই মহানগরীর পাশ্ববৰ্ত্তী ক্ষুদ্র দরিয়াগঞ্জে আপনার দলবল রাখিয়া, জীর্ণ রাজপ্রাসাদে স্বয়ং বাস করিতে লাগিলেন । সম্ভবতঃ কাৰ্য্য নিৰ্ব্বাহের সমস্ত ভার নিজেদের উপব গ্রহণ এবং মারাঠাশক্রর হস্ত হইতে নিজেদের মুক্তির জন্ত র্তাহার এইরূপ বন্দোবস্ত করিলেন । রোহিল!-নবাবের প্রসাদেব বাসের আব একটুকু মতলব ছিল। তিনি ধারণা কবিয়াছিলেন যে, রাজপ্রাসাদে নিশ্চয়ই লুক্কায়িত ধনরাশি আছে, এবং একটু চেষ্টা করিলেই তিনি তাহার অধিকারী হইতে পারিবেন । ২৯শে জুলাই হইতে ২রা আগষ্ট পৰ্য্যন্ত তিনি স্বয়ং অট্টালিকা সমুহের তলদেশ খনন কার্য্যে নিযুক্ত ছিলেন, কিন্তু কিছুতেই তাহার অভিলষিত ধনরাশি মিলিল না । তখন তিনি শাহ এবং তাহার পরিবারবর্গের উপর অত্যাচার আরম্ভ করিলেন। মহিলাগণকে বিরলবাস হইতে টানিয়া বাহির করিয়া প্রকাগু রাজপথে ছাড়িয়া দেওয়া হইল,—অপমানের চূড়ান্ত আরম্ভ হইল । ১০ই আগষ্ট তারিখে অপমানিত, নিপীড়িত সম্রাটকে রাজসিংহাসনস্থিত রোহিলানবাবের সম্মুখে আনয়ন করা হইল । সম্রাটকে গুপ্তধনের বিষয় জিজ্ঞাসা করিলে, তিনি স্পষ্ট বাক্যে কহিলেন, সম্রাট কখনও মিথ্যা কহিতে জানে ন, তাহার প্রাসাদে কোনও লুক্কায়িত ধনভাণ্ডার নাই ৷ শাহের একথায় সন্দেহ করিবার কিছু না থাকিলেও, রোহিলা-নবাব এই উত্তরে সিংহাসন হইতে লাফাইয়। গোলাম কাদির ও ইসলাম বেগ »›ፃ$. উঠিলেন ; এবং তাহার দলের কয়েকজনের, সাহাযে সম্রাটকে ভূতলে পতিত এবং ছুরিকা-; ঘাতে পার্থিব সম্পদের শ্রেষ্ঠ উপাদান চক্ষু হইতে র্তাহাকে চির জীবনের মত বঞ্চিত করিলেন । হায়, কি শোচনীয় পরিণাম ~ তারপর একটী অসহায় সাহাজাদাকে নামে মাত্র বাদসাহ করা হইল। কিন্তু প্রকৃত পক্ষে রোহিলাই সম্রাট হইলেন । সময়ে, তাহার স্পৰ্দ্ধা এতদূব বাড়িয়া উঠিয়াছিল যে, দিল্লিসিংহাসনে উপবেশন করিয়া নিজের মুখস্থিত তাম্রকুটের ধূম্ররাশি ঘৃণাভরে তাহাব হস্তের ক্রীড়াকুন্ধক স্বরূপ নব সম্রাটের মুখে দিতেও তিনি দ্বিধা বে: করিতেন না । কিন্তু তাহার শাস্তি গ্রহণের সময়ও ক্রমে নিকটতর হইয়া আসিতেছিল । তাহার বিস্তৃত সেনাদলের পশ্চাদ্ভাগস্থিত, সাধু সেনাপতিটি এক্ষণে র্তাহার ঘৃণিত সমরসার্থীকে পরিত্যাগ করিলেন ; এবং বেগের প্রস্থানান্তর আগ্রী ও মথুরার মারাঠাগণ ক্রমশঃ অগ্রসর হইতে আরম্ভ করিল। এদিকেও কয়েক সপ্তাহ ধরিয়া রাজপ্রাসাদ বিলাসভোগের একটা প্রধান আড়ড়া হইয়া, উঠিল । - ক্রমে ভাণ্ডার শূন্য হইয়া আসিল । আনসনে লোক মরিতে আরম্ভ করিল । তবুও অত্যাচারের বিরাম নাই। অবশেষে যখন আর জীবন রক্ষার উপায় থাকিল না, তখন তিনি ৭ই সেপ্টেম্বর তারিখে—সদলবলে যমুনার পারে প্রস্থান করিলেন । সাধু সেনাপতি কর্তৃক পরিত্যক্ত হইঙ্গ} রোহিলা-নবাব আর রাণ-খা এবং বৈগনের শিক্ষিত পদাতিক সৈন্তদলের সন্মুখীন হইতে