পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২০.djvu/৫১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১২৬২ তৃপ্তিজনক কোন লক্ষণ দেখা যায় না । বোম্বায়ের লোকের অনেকে আমাদেরই মত বিবাহাদি গৃহ-অনুষ্ঠানে অপরিমিত ব্যয় করে বিপদগ্ৰস্ত হয়ে পড়েন, ব্যয় সঙ্কোচের দিকে কাবে দৃষ্টি নেই। কিন্তু বিবাহেব ব্যয় সংক্ষেপ করা ত সামান্ত ব্যাপার, আসল যে দিকে আমাদের লক্ষ্য দেওal উচিত সে হচ্ছে বাল্য বিবাহ ও বিধবা-বিবাহ। বাল্য বিবাহ বাল্য বিবাহ—এ এক বিষম রীতি । শুধু বোম্বায়ে কেন, বাল্য বিবাহের বিষম ফল ভারতের সর্বত্রই অল্পবিস্তর প্রত্যক্ষ করা যায় । কস্তাকে অত ছোট বয়সে পিতা মাত গৃহ থেকে বিদায় করে যে কি স্বর্গ সুখ লাভ করেন তা আমি ভেবে পাই না । পুত্রের বিবাহেও অনেক স্থলে অকণরণ ব্যস্ততা দেখা যায়। পুত্রের বিদ্যাশিক্ষা, তার স্বাধীন বৃত্তি উপার্জনের উপায় করে দেওয়া—এ সকল গুরুতর কর্তব্য ছেড়ে সৰ্ব্বাগ্রে তাব বিবাহ দিতেই গুরুজনের ব্যস্ত। বোম্বায়ে বালক বালিকার বিবাহ পুতুলে পুতুলে বিয়ের মতন। একজন গাইকওয়াড় ছিলেন তিনি পায়রার বিয়ে দিতে বড় ভাল বাসতেন—তার সভাসজ্জন নিমন্ত্রণ কবে খুব ধুমধামে কপোত কপোতীর বিবাহোৎসব অনুষ্ঠান করতেন— এই সব বালক বালিকার বিবাহ অনেকটা সেইরূপ। ওদেশে দশ বার বৎসরের বালক সাত আট বৎসরের বালিকা—এইরূপ দম্পতিকে অনেক সময় উদ্বাহ শৃঙ্খলে বদ্ধ হাত দেখা যায়। মেয়ে পুরুষের বিবাহযোগ্য বয়স বাড়িয়ে না দিলে সমাজের ভারতা চৈত্র, ১৩২• কল্যাণ নেই। পূর্ণ বয়সের পূৰ্ব্বে বিবাহ দেওয়াতে স্ত্রী পুরুষ উভয় পক্ষেরই অনিষ্ট, সন্ততির পক্ষেও অনর্থকর । এইরূপ বাল্য বিবাহ হইতে হিন্দু সমাজের যে কত অনর্থোৎপত্তি হইতেছে বলা যায় না। বিপন্ন৷ বালপ্রস্থতি, নিৰ্ব্বীৰ্য্য সন্তান সন্ততি, শিক্ষার ব্যাঘাত, দারিদ্র্য, অকাল বাৰ্দ্ধক্য, অকাল মৃত্যু—জাতীয় অবনতির এই সমস্ত লক্ষণ দেখেও আমাদের চৈতন্ত্যু হয় না—আশ্চৰ্য্য! অকালপক্ক ফল যেমন মুস্বাদু হয় না, অকালপ্রস্থত সস্তানও সেইরূপ নিবীৰ্য্য রুগ্ন ক্ষিঃ হইয়া ভূতলে অবতীর্ণ হয়। কেহ বলিতে পারেন যে গ্রীষ্মপ্রধান দেশে মানুষের শরীর মনের শক্তিসকল অকালে পরিপক্ক হয় এইজন্তে তরুণ বয়সে বিবাহ দেওয়া আবশুক হয়ে পড়ে। কিন্তু তার ত একটা সীমা প্রকৃতিতে নির্দিষ্ট আছে । এক্ষণে জিজ্ঞাস্য এই যে, প্রাকৃতিক নিয়ম অনুসারে কোন বয়সে স্ত্রী পুরুষের বিবাহ দেওয়া উচিত ? পাঠকের মধ্যে অনেকে অবগত আছেন, বিবাহের নুতন আইন প্রচলিত হবার পূৰ্ব্বে মহাত্মা কেশবচন্দ্র সেন এই বিষয়ে কতকগুলি দেশীয় ও যুরোপীয় ডাক্তারের মত জিজ্ঞাসা করেন —ডাক্তার নৰ্ম্মান, ডাক্তার ফেরার, ডাক্তার মহেন্দ্রলাল সরকার, ডাক্তার চন্দ্র, ডাক্তার আত্মারাম পাণ্ডুরঙ প্রভৃতি বিচক্ষণ ডাক্তাবের বিবাহের বয়স সম্বন্ধে সেই সময়ে আপন আপন অভিপ্রায় প্রকাশ করেন। এ দেশের আবহাওয়ার গুণাগুণ, দেশীয়দের শরীর প্রকৃতি এই সকল বিষয় বিচার ক’রে র্তারা বলেছেন যে পুরুষের ২০ বৎসরের নীচে,