৩৭শ বর্ষ, দ্বাদশ সংখ্যা খাটিয়ার নিকট চৌকিতে বসিয়া ঈষং ঝু কিয়া স্থির নেত্রে শায়িত ব্যক্তির দিকে চাহিয়াছিলেন, অপর জন একটু দূরে একটা কেদাব অধিকার করিয়াছিলেন,—উভয়েই উথি ত হইয়া টুপি খুলিয়া নত মস্তকে বিশেষ শ্রদ্ধাব সহিত অভিবাদন কবিলেন। কমলা কোন দিকে চাহে নাই, ধীবপদে আর্দালি নির্দিষ্ট গৃহে প্রবেশ করিল। মলিন বিছানায় দীনহীনের দ্যায় এই সাধাবণ দাতব্য হাসপাতালের পুতিগন্ধময় অন্ধকার কক্ষমধ্যে ও কে পড়িয়া ? ও কে ? কমলা শব্যাপাশ্বে আসিয়া শায়িতেব পানে চাহিয়াই আতঙ্কে শিহরিয়া দুই হাতে দুই চক্ষু আচ্ছাদন করিল । বোগীর যন্ত্রণব সীমা ছিল না, বাহ্যজ্ঞান নাই, অস্তু ফ্ৰানও বিলুপ্ত প্রায় ; অবর্ণনীয় ঘন্থণার অব্যক্ত ধ্বনি পাষাণকেও বোধ হয় বিগলিত করিতে পারে। কঠোবচিত্ত চিকিৎসক, পুলীষ কৰ্ম্মচারী শুশ্রুষাকারী সকলের পক্ষেই এ দৃশু যেন সহনাতীত । সহসা বেগী চমকিয় উঠিল, দুষ্ট বাহু উৰ্দ্ধে তুলিয়া দৃষ্টিহীন দুই নেত্ৰ সবেগে বিস্তৃত করিতে গেল, নিদাৰুণ যন্ত্রণ ধ্বনি কণ্ঠভেদ করিয়া ঘরটার স্তব্ধতাকে এমনই সহস৷ আঘাত কবিল যে, অকস্মাং ম্যাজিষ্ট্রেট সাহেবের হস্ত হইতে টুপিট গৃহতলে সশব্দে পড়িয়া গেল । কমলাব সমস্ত শরীবেব প্রতি শিরায় একটা বরফের ধাবা ঝিন্ ঝিন্ করিয়া বহিয়া গিয় তাহাকে অসাড় করিয়া দিল । সে অবসন্ন ভাবে বসিয়া পড়িয়। খাটের পীয়ে মাথ রাখিল। - রোগীর শরীরের স্পন্দন , স্থির হইয়া বাগদত্ত >sbr> আসিয়াছে ; যন্ত্রণাব অর্কুটধানিটুকুও ক্রমে থামিয়া গেল ; নিশ্বাসের দ্রুত তাল সমান হইল, সহসা শঙ্কহীন কণ্ঠ একটা পরিষ্কার স্বর উচ্চারণ কবিল "বল কমলা ! আমি পাপী নই ? বল আমায় ক্ষম কবেছ ! উঃ ভগবান!” ডাক্তাব বাবু মুধেব উপর ঝকিয় শড়িলেন, চেয়া ব সরাষ্টয়া সিবিল সার্জন একটু হটিয়া গেলেন, ম্যাজিষ্ট্রেট সাহেব টুপি কুড়ায় উঠিয়া দাড়াইলেন । কমলা মুখের উপর হইতে করাচ্ছাদন খুলিয়া যে ব্যক্তি তাহার সম্মুখে নিম্পদ নিঃসাড় পড়িয়া আছে তাঙ্গাব বিভাষিকাপূর্ণ শোচনীয় মুখের দিকে চাহিল । সমস্ত পৃথিবী –এই জীবনের সংশ্লিষ্ট বিবিধ বিচিত্র ঘটনা জাল,—সমস্তই তাহtয় মন হইতে এককালে পুরাতন চিত্রের মত নিঃশেষ মুছিয়া গিয়াছিল । কেবল মাত্র মনে ছিল এই অনাদৃত হতভাগ্য, তাহার একটি অনুবোধে নিজের এই শত আশাউদ্দীপ্ত নবীন জীবন উৎসর্গ করিয়াছে। তাহার মৌন বিবর্ণ অধব কোন ভাষা কোন ধবনি উচ্চারণ করিল না, কিন্তু নীরব হৃদয়েব মধ্যে গভীর অনুতপ্তচিত্ত এমন কোন ক্ষমার কথা সেই দ্য বিমুক্ত প্রাণের উদেখে প্রেরণ করিয়াছিল, যাহ অন্ত কোন জাগতিক না শুনিলেও তাহার নিকট পৌছিতে বিলম্ব হয় নাই। এবং তাহার সমুদয় সংশয় উদ্বেগ দুব করিয়া ইহা তাহাকে যে শান্তি প্রদান করিয়াছিল, সেই পরিত্যক্ত দগ্ধ দেহেও তাহার চিহ্ল প্রকটিত হইয়া উঠিল । ( 4.9 ) একটা মানুষে কত বড় বড়-দুঃখের চাপের মধ্যে বাচিয়া থাকিতে পারে এই মহাপরীক্ষণ