পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩২১.djvu/১৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ు ( 8 থাকিত, স্মৃতি তাহাকে;ছাড়িত না । নিভৃত বিজন ঘরের কোণ ! বাহিরের কলরব সেখানে গিয়া পৌছায় না। নীরব অবসরে সে তাহার স্মৃতির দেওয়া পুথিখানা খুলিয়া বসে। পুথি জীর্ণ হইয়াছে, তবু তাহার কয়েকটা পৃষ্ঠা এখনও উজ্জল রহিয়াছে ! সেই পাতাগুলার পানে মৌন-মুক বিপিন চাহিয়া থাকে। চোখ তাহার জলে ভরিয়া যায়! ঝাপসা চোখে পুথির পাতাও মিলাইয়া ভারতী আসে। নুন্ন ছবি অজ্ঞাতে তাহার চোখের । সম্মুখে ফুটিয়া উঠে। সে ছবি কমলের। পত্র-পুষ্পে খচিত আলোর লহরে ভূষিত বিরাট সভা-মণ্ডপ । সে মণ্ডপের এক পাশ্বে উচ্চ বেদিক । বেদিকীয় বসিয়া কমল গান ধরিয়াছে। শিরে তাহার মণিময় মুকুট, ভালে ললাটক, ওষ্ঠে সম্মিত হাসি, মুথে স্বৰ্গীয় জ্যোতিঃ । আর তাহারই‘চারিধাব ঘেরিয়া সারা বাঙ্গালীর লোক বসিয়া আবেশ-বিহবল ভাবে সে গীতি-সুধা পান করিয়া ধন্ত হইতেছে! সে সভায় সকলে আছে, সকলের উপর দিয়াই কবির প্রসন্ন স্মিত হাস্ত অজস্র ধারে বহিয়া চলিয়াছে! শুধু নাই দেথা বিপিন! কৈ, কবির চক্ষু বিপিনকে একবারও খুজিতেছে না ত? না, আজ আর বিপিনকে তাহাব প্রয়োজন নাই ! মুর সাধিতে হয়,নির্জনে—সে সময় একজন,—একজনের ..শুধু । পাশ্বে থাকা প্রয়োজন ! যদি ভুল হয়, সে শুধরাইয়া দিবে। যদি ঠিক হয়, সে তারিফ করিবে ! শজ স্বর সাধ হইয়া গিয়াছে,—আজ আর তাঙ্গকে কি প্রয়োজন ! উপরে উঠবার সময় সিঁড়ির প্রয়োজন–কিন্তু উপরে উঠিয়া সিঁড়ির পানে চাহিয়া থাকা মুঢ়তা ! সিড়ির কাজ তখন জ্যৈষ্ঠ, ১৩২১ ফুরাইয়াছে। নামিবার ও যখন প্রয়োজন নাই, তখন সে সিঁড়ি রহিল কি গেল, তাহা দেখিয় কাজ কি ! rs o কমলের খ্যাতি কাব্যের ক্ষেত্র ছাড়াইয়া ক্রমে নাটকের ক্ষেত্রে দেখা দিল ! দুই মাস ধরিয়া বাঙ্গালার সংবাদ-পত্রে মাসিক পত্রে দুন্দুভি বাজিতেছিল, কবিবব কমলকুমার নাটক লিখিয়াছেন। বাঙ্গালীর প্রধান নাট্যশালা হীরক রঙ্গমঞ্চে সে নাটকের অভিনয় হইবে- মহাসমারোহে নূতন নাটকের মহল চলিতেছে। সুদূর প্রবাসে বসিয়া বিপিন সে দুন্দুভিনাদ কৰ্ণে শুনি ল । তাহার মাথার মধ্যে রক্ত তোলপাড় ধরিয়া উঠিল । এ সেই কমল, তাঙ্গব বমল! সে আজ বাঙ্গালার সাহিত্যগগনে উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক ! আর সে ? বিপিনের চোখের কোণে অশ্রুবিন্দু ফুটিয়া উঠিল। সে, বাক্স খুলিয়া কমলের চিঠিপত্রগুলা বাছিব করিল। এই তাহার হস্তাক্ষব, এই ভাগব হৃদয় । চিঠির পর চিঠি খুলিয়া বিপিন পড়িতে লাগিল। কৃপণের ধনেব তই চিঠিগুলিকে সে বুকে ধরিয়া রাখিয়াছে। এই সেই প্রথম চিঠি ! আট পৃষ্ঠা ব্যাপিয়া চিঠি । ভাদ্রব কূলে কুলে ভরা নদীর মতই কমলের সমস্ত হৃদয়টুকু এই আট পৃষ্ঠায় লুটtষ্টয়া পড়িয়া আছে! তাহার পর—? চিঠির পাতার সঙ্গে সঙ্গে হৃদয়ও গুড়াইয়া গিয়াছে ! শেষে-আজ তিন বৎসর চিঠির আর দেখা নাই। শেষ চিঠিখানি তিন বৎসর পূৰ্ব্বেকার লেখা ! শুধু দুইটি ছত্র —“মাসিক-পত্রের তাড়ায় চিঠি দিতে অবসব