পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩২১.djvu/২৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

*○● পড়নের” জনী বলিয়াও জমীর পরিমাণ করিবার , রীতি আছে । "একমণ ধান্ত পড়নের” জমী বলিলে, সেই জমীতে বপন জন্ত একমণ বীজধাষ্ঠের প্রয়োজন হয়, ইহাই বুঝায় । এক সময়ে একমণ ধান্ত পড়নের জমীর প্রকৃত পরিমাণ ৮ বিঘা বলিয়া সরকারী কৰ্ম্মচারীগণ স্থির করিয়াছিলেন। এদেশে জমীর পরিমাণ বুঝাইবাব জন্ত আর এক প্রকার হিসাব আছে । তাহাকে লোকে রেখকুলির হিসাব বলে । এই রেখকুলির হিসাব মানভূম জেলা ও বাকুড়া জেলার স্থানে স্থানে প্রচলিত আছে । রেখকুলির হিসাব বুঝিবার জন্ত, এই স্থানেব একটি আদিম প্রথা বুঝিবার প্রয়োজন। এই সকল জঙ্গলময় স্থানে পূৰ্ব্বে এক একটি পরিবার একস্থানে বাস কবিয়া আপনাদের পরিশ্রমে জঙ্গল কাটিয়া কৃষিক্ষেত্র প্রস্তুত করিত। বহুপুরুষ ধরিয়া সেই আদিমপরিবারের বংশাবলী এই প্রকারে গ্রামের মধ্যে কৃষিক্ষেত্র প্রস্তুত করিয়া শেষে তাহ আপনাদের ভিতর বিভাগ করিয়া লইয়াছে । এইপ্রকার বিভাগ কালে গ্রামের যাবতীয় পুরাতন আবাদী জমা আট, দশ, বার, চোঁদ কি ষোল অংশে বিভক্ত হইয়াছে। এই প্রকার এক একটি অংশের নাম এক একটি রেখ ! ভাগের সুবিধার জন্ত অধিকাংশ স্থলে এই রকম জমী ষোল অংশে বিভক্ত হইয়াছে। জেলার স্থানে স্থানে অদ্যপি আট বা দশ রেখের গ্রাম ও দেখিতে পাওয়া যায়। এক রেথের এক চতুর্থাংশের নাম কুলি। এক রেথ বা এক কুলিতে যে কত পরিমাণ জমী হইলে তাছা বুঝিবার ভারত . . আষাঢ়, $৩২১ উপায় নাই। কোনও গ্রামেব রেখে হয় ত বিশ বিঘা জমী থাকিতে পারে। আবাৰ তাহার পার্শ্ববৰ্ত্তী গামের রেখে দশ বিঘারও কম জমী থাকা অসম্ভব নহে । গ্রামের কৃষকেরা কিন্তু এই রেখ বা কুলি ব্যতীত জমীর পবিমাণস্বচক অপর বিশেষ কোন পৰিচয় দিতে পারে না । এই রেখ ও কুলি গ্রামেব পুরাতন আবাদী জমীব নির্দিষ্ট ভগ্নাংশ মাত্র । কেবল অর্ণবাদী জমি সম্বন্ধেই এই প্রকবি র্থে কৃলি নির্দিষ্ট উৎপন্ন ও পড়নের হিসাবে জমীব পবিমাণ স্থিব কবা হইয় থাকে । এদেশের সর্বত্র যে সকল অনুৰ্ব্বর পতিত ডাঙ্গ ও জঙ্গল আছে, তাহাব পরিমাণ প্রকাশ কবিবাব ভাষা সাধাবণ লোকের পরিজ্ঞাত নাই । দূৰত্ব বুঝাইবার জন্ত এখানকার সাধাবণ ভাষায় “কাড়,” , “ডাক,” ও “হঁক” শব্দ ব্যবহৃত হয়। ‘কাড়' শব্দের অর্থ ‘তার’, “এককাড়” দূর বলিলে, একট কাড় সজোবে নিক্ষিপ্ত হইলে যতদূব যায়, ততদূর বুঝায়। সেই প্রকাবে ‘একডাক’ বলিলে, উচ্চৈঃস্বরে ডাকিলে যতদুব হইতে শুনিতে পারা যায়, ততদুব বুঝিতে হইবে। হাক বলিলে, ‘ডাক অপেক্ষ অধিকদূর বুঝায়। পল্পী গ্রামের কোনও কোনও লোক ডাকাতের “ছাক" বা চাৎকার গুনিয়া থাকিবেন। “হাক” শব্দে ঐ প্রকার শব্দ বুঝায়। ফলতঃ “কঁড়ি”, “ডাক” বা "হাক” শব্দে কোনও প্রকার নির্দিষ্ট দূরত্ব স্বচিত হয় না। অনেক সময়ে "হঁক” শব্দে এক মাইল দূরের জায়গ পৰ্য্যন্ত বুঝায়।