পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩২১.djvu/৪০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৮শ বর্ম,'চতুর্থ সংখ্যা কাছে কি দাবী করচে ! সে কি " একথা বলচে, ওগো তুরুণ যুবকসম্প্রদায় দেখ, যুগের জয়ত্বের বোঝ। ক্রমশই আমার দেহকে শীর্ণ করে তুলচে ; যাদের হাতে আমার জীবন সমর্পণ করা হয়েছিল, তারা আমাকে কারাগারে বন্দী করে রেখেছে ; যেখানকার যতকিছু আবর্জন তা কুড়িয়ে এনে এ কাবাগারের দরজায় স্থাপন করে রেখেছে ; আমাকে এ কারাগার থেকে মুক্ত করে এই নবযুগের প্রভাতে একবার মুক্তাকাশভলে দাড়াতে দেও। কই আমাদের প্রাণ থেকে এমন্স বাণী এখনও শোনা যাচ্চে না । যখনই কারাগারের প্রাচীর ভেদ করে, সমাজের WS) ক্ৰন্দন ধ্বনি বাইরে পৌছতে আরম্ভ কৰেছে, তখনই দ্বাররক্ষকগণ কাল ঘণ্টার কলরবে সব ঢেকে দিতে চেষ্টা করেচে। থামিয়ে দিন কাল ঘণ্টার অবিশ্রাম কলহব। যে সমাজে মানুষ নেই যে সমাজে প্রাণ নেই, তার আবার কিসের পূজা ! যে সমাজ মামুষ দেখলেই, বলে, “ওগো তুমি কোন বংশে জন্মেছ ? তোমার গোত্র কি ? তুমি এটা পূজা কর কিনা ওটা মান কিনা, অমুকের সঙ্গে এক পংক্তিতে বসে খাও কিনা ? যে সমাজ তুমি কার সঙ্গে মেয়ে বিয়ে দিলে, কত বয়সে মেয়ে বিয়ে দিলে, সমুদ্রের উপরে ছেলে পাঠিয়ে আবার প্রায়শ্চিত্ত করালে কিনা, এই কৈফিয়তই চাচ্চে, সে সঙ্কীর্ণ সমাজপ্রাচীরের সীমায় বন্ধ থেকে মানুষ জন্মাবে এত বড় হবশি কে করবে ? যে গাছের গোড়ায় কীটের দুর্গ নিৰ্ম্মাণ করেছে—সে . আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয় <e

8 o o গাছে জল দিলে কি হবে ? এই জন্যই ত শিক্ষা আমাদের জীবনকে বড় করে তুলছেন, আমাদের আশার ক্ষেত্র সংকীর্ণ হয়ে আসছে শক্তির মূল আশারসে সিক্ত না হয়ে ক্রমশ শুকিয়ে যাচ্চে। ভূ-শিকড় নষ্ট হয়েছে বলে ন পারছি দেশের মাটি থেকুে রস কর্ষণ করতে না পারছি বাহির থেকে কিছু সংগ্ৰহ করতে । রাজনৈতিক স্বাধীনতা নেই বলে আমরা দুঃখ করে থাকি,—আমার বিশ্বাস যোগ্যতার অভাব বশতঃই আমরা সে অধিকার থেকে বঞ্চিত । স্বতরাং সেজন্ত অনুশোচনা না করে আমাদের যোগ্যতা বৃদ্ধি করবার চেষ্টা করাই বুদ্ধিমানের মত কাজ,--এবং সৰ্ব্বতোভাবে প্রার্থনীয়। বিচার করে দেখতে গেলে শারীরিক দাসত্ব অপেক্ষ মানসিক দাসত্ব আরো ভয়ঙ্কর । যতদিন আমাদের মনুষ্যত্ব না জন্মে ততদিন সৰ্ব্ব প্রকার অধীনতা তাহার অবশ্যম্ভাবী পরিণাম মাত্র। কোনো জাতিই শক্তির ক্ষেত্র একেবারে নিষ্কণ্টক পায়নি। ক’রে কৰ্ম্মে ভেঙ্গে গড়ে নানা ঘাত প্রতিঘাত সহ করে সবাইকেই পথ চলতে হয়েছে। সার্কাসের ঘোড়া যেমন যত ধাক্কা পায় ততই তার উৎসাহ ও বেগ বৃদ্ধি পায়, তেমনি যে জাতি শক্তিকে সীমাবদ্ধ দেখে পেছিয়ে যায়নি বরং দ্বিগুণ উৎসাহে সমস্ত সীমা লঙ্ঘন করে নিউয়ে ছুটেছে “সত্যেরে করিয়া ধ্রুবতারা”, সে জাতিই শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। আমাদের যদি এ জড়ত্ব থেকে একবার গা ঝাড়া দিয়ে উঠতে হয় তবে যেটুকু মুযোগ সুবিধা সহায় আছে তারই সামনে পথ কেটে চলতে হবে।