ষষ্ঠ অধ্যায়।
অধ্যবসায়ের অবতার; অদ্ভুত বিক্রম অলিকসন্দর ভারতবিজয় বিষয়ে স্বীয় আশা অনুরূপ ফললাভে অসমর্থ হইলেও, তাঁহার দুঃসহ তেজ, অলৌকিক কার্য্য সম্পন্ন করিবার জন্য দুরাগ্রহ, দুদ্ধর্ষ শক্রকূল পরিবেষ্টিত হইয়া ও স্থিরভাবে কার্য্য করিবার অদ্ভুত শক্তি, চিরকাল বিস্ময়ের সহিত আলোচিত হইবে। অলিকসন্দরের, ভারতবর্ষে পদার্পণের সহিত ক্ষত্রিয়াদি বর্ণত্রয় যে প্রবল বাধা প্রদান করিয়াছিলেন, তাহাতে কিছুমাত্র আশ্চর্য্যের বিষয় নাই। কিন্তু তপস্যা ও স্বাধ্যায় নিরত নিরীহ প্রকৃতির ব্রাহ্মণগণ, যাঁহারা শত্রু ও মিত্র উভয়কেই সমানভাবে দর্শন করিয়া থাকেন; যাঁহারা স্ত্রী, পুত্ত্র, পরিজন, পরিত্যাগ করিয়া অরণ্য মধ্যে ঈশ্বর উপাসনায় জীবন অতিবাহিত করেন, যাঁহারা স্তুতি ও নিন্দ-লাভ ও অলাভ, অর্থ ও অনর্থ প্রভৃতি সাংসারিক বিষয়কে বিষবৎ পরিত্যাগ করিয়া নিস্পৃহভাবে অবস্থান করিয়া থাকেন; সমৃর্দ্ধি সম্পন্ন হইবার ইচ্ছা, যাঁহারা দূরে পরিত্যাগ করিয়া ভিক্ষাকেই একমাত্র উপজীবিকা করিয়া কোনরূপে জীবন যাত্রা নির্ব্বাহ করেন; সেই সকল নগ্ন প্রায় ব্রাহ্মণগণ, কি জন্য সর্ব্বাপেক্ষা শ্রেষ্ঠদান হৃদয়ের শোণিতদান করিয়া জন্মভূমির পূজা করিয়াছিলেন? কি জন্য তাঁহারা বৈদেশিক আক্রমণ হইতে স্বদেশ রক্ষা করিবার জন্য দলে দলে এই পরম প্রিয়তম শরীরকে যুদ্ধযজ্ঞে আহুতি প্রদান করিয়াছিলেন? সে বিষয়ের কারণ অনুসন্ধান না করিলে আমাদের প্রস্তাব অসম্পূর্ণ অবস্থায় রহিয়া যায়,