পাতা:ভারতের দেব-দেউল - জ্যোতিশ্চন্দ্র ঘোষ.pdf/১৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারতের দেব-দেউল প্ৰথম দ্বার উত্তীর্ণ হইয়া যেমনই প্ৰধান প্রকোষ্ঠে উপনীত হওয়া যায় তাহার সম্মুখেই এক বিরাটু বুদ্ধমূৰ্ত্তি বেদীতে স্থাপিত দেখা যায়। মূৰ্ত্তিটি ব্ৰহ্মদেশীয় শিল্পীর দ্বারা সেই দেশের আদর্শে গঠিত, সমস্ত দেহ সোনালী রংয়ে মণ্ডিত। বুদ্ধদেব যেন যোগাসনে ভূমিস্পর্শমুদ্রায় সংসারের দুঃখযন্ত্রণাক্লিষ্ট মানবের পরিত্রাণের চিন্তায় স্তিমিতলোচনে ধ্যানে বসিয়া আছেন। গাত্র যদিও রাজ্যোচিত পরিচ্ছদে আবৃত এবং মস্তকে রাজচ্ছত্ৰ বিরাজিত, তথাপি মূৰ্ত্তির নয়নদ্বয় ধ্যানীরই মতন শান্ত। ইহার প্রশস্ত ললাটে চন্দনের বিষ্ণুতিলক শোভিত, গলায় পুষ্পমাল্য দুলিতেছে। ইনি হিন্দুর নবম অবতাররূপে নিত্য শতসহস্ৰ হিন্দুযাত্রীর নিকট হইতে পূজা ও অর্ঘ পাইতেছেন। অন্যান্য ঘরে নানা প্রকারে বহু বুদ্ধমূৰ্ত্তি দেখিতে পাওয়া যায়, সেগুলি সমস্তই আধুনিক যুগের। মন্দিরের উত্তর পার্শ্বে মেঝে হইতে চার ফুট উচু ও পঞ্চাশ ফুট লম্বা একটি মঞ্চ রহিয়াছে, এই স্থানে বুদ্ধদেব জ্ঞানলাভ করিবার পর আনন্দিত-চিত্তে পূর্ণ সাত দিন বিমুক্ত সুখে ধ্যানে নিবিষ্ট থাকিয়া পূর্ব ও পশ্চিমে পাদচারণ করিয়াছিলেন । এবং ইহারই একপ্ৰান্তে প্ৰথম যে স্থানে তিনি পদাৰ্পণ করেন। সেখানে এক কারুকাৰ্য্যময় পদচিহ্ন ক্ষোদিত রহিয়াছে। কিংবদন্তী আছে, এই পদচিহ্ন পূর্বে নানা মণিমুক্তাখচিত ছিল। ইহার কিছুদূরে উত্তর দিকে বজাসন নামে এক রাজাসন আছে, তাহাও অপূর্ব ও মূল্যবান মণি-মরকত দ্বারা মণ্ডিত ছিল, এইরূপ হিউএন সাং লিখিয়া গিয়াছেন। বুদ্ধদেব বুদ্ধত্ব পাইবার পরই এই স্থানে বসিয়াছিলেন, সেই জন্য বৌদ্ধগণ প্ৰগাঢ় ভক্তির সহিত এই আসনটিতে অর্ঘ-প্ৰদান করিতেন। Y up V