পাতা:ভারতের দেব-দেউল - জ্যোতিশ্চন্দ্র ঘোষ.pdf/১৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বুদ্ধগয়া গাত্রে বুদ্ধদেবের জীবন-লীলার বহু চিত্র সুন্দর ও সুস্পষ্টভাবে উৎকীর্ণ রহিয়াছে। বুদ্ধের প্রত্যেক জীবনের খেলা এক একটি প্ৰতিভূ (symbol) দ্বারা ব্যক্তি হইয়াছে। তখন মানবমূৰ্ত্তির আকারে বুদ্ধদেবকে প্ৰকাশ করা হইত না। যেমন বলগাবিহীন আরোহিশূন্য অশ্ব বুদ্ধের গৃহত্যাগের প্রতীক, বোধিদ্রুম ও বজাসন বুদ্ধের তপস্যার ও বুদ্ধত্বপ্রাপ্তির, চক্ৰ প্ৰথম ধৰ্ম্মপ্রচারের, স্তৃপ নিৰ্বাণ-লাভের, প্ৰস্ফুটিত পদ্ম বুদ্ধের জন্মের কথার প্রতীক রূপে উৎকীর্ণ রহিয়াছে। পাথরের বেড়াগুলিতেও এইরূপ চিত্ৰ ক্ষোদিত আছে। প্ৰধান মন্দিরের পোস্তায় ও গাত্রে ছোট-বড় অসংখ্য যে-সব বুদ্ধমূৰ্ত্তি ক্ষোদিত রহিয়াছে তাহ সমস্তই বৰ্ম্মার শিল্পীদের ধারায় ক্ষোদিত ; ভারতীয় শিল্পীদের ধ্যানী, প্ৰশান্ত, কমনীয় স্বৰ্গীয় তেজঃপূর্ণ, অন্তর্দষ্টিযুক্ত সৌম্যমূৰ্ত্তির মতন চিত্তাকর্ষক না হইলেও এই মূৰ্ত্তিগুলি দেখিলে, এই স্থানে দাড়াইলে এক শান্তির রাজ্যে উপনীত হওয়া যায়। যেন বুদ্ধময় জগৎ—চারিদিকে যেন সেই বৌদ্ধদের মহামন্ত্র “ওঁ মণিপদ্মে হু” ধ্বনিত প্ৰতিধ্বনিত হইয়া উঠিতেছে। শ্ৰদ্ধাবনত চিত্তে বলিতে হয়—“বুদ্ধং সরণং গচ্ছমি, সজ্যং সরণং গচ্ছমি, ধৰ্ম্মং সরণং গচ্ছামি” ৷ গয়া যেমন বৌদ্ধদের পরম পবিত্ৰ স্থান, তেমনই হিন্দুদের এক মহাতীর্থ। কানিংহাম ও হাণ্টার সাহেব দেখাইয়াছেন— আদিতে গয়া বৌদ্ধ তীর্থরূপে প্ৰসিদ্ধি লাভ করে, পরে বৌদ্ধযুগের অবসানের সহিত হিন্দুরা বৌদ্ধদের এই মন্দির দখল করিয়া হিন্দুদের দশ অবতারের অন্যতম নবম অবতার-রূপে বুদ্ধদেবের পূজার প্রচলন করেন। প্রত্নতত্ত্ববিৎ রাজা রাজেন্দ্রলাল মিত্রেরও So