পাতা:ভারতের দেব-দেউল - জ্যোতিশ্চন্দ্র ঘোষ.pdf/১৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারতের দেব-দেউল সমতল ছাদের জলপাড়া বন্ধ করিতে হইলে ছাদের ঢাল প্রচুর দিতে হইবে। অবশ্য ঢালু চারাচালা বা আটচালার ছাদ খড়ের, টিনের ও কাষ্ঠেরই প্ৰস্তুত হইয়া থাকে। এখনও সে পদ্ধতি প্রচলিত আছে। রীজ ডেভিস সাহেব বলিয়াছেন যে, পালি সাহিত্যে লেখা আছে যে বড় বড় প্রাসাদের ছাদ সমতল হইত। তাহদের “উপরি-পাসােদাতলা” বলা হইত। সাধারণতঃ বাঙ্গলাদেশে খড়ের ঘরের মতন চালই ব্যবহৃত হইয়া আসিতেছে । এমন কি গৌড়ের ‘সোনা মসজিদে’র খিলানযুক্ত ছাদও বাঙ্গলার আটচালার পরিকল্পনায় নিৰ্ম্মিত হইয়াছিল । গৌড় এক সময়ে বাঙ্গলার স্থাপত্য-শিল্পেব শীর্ষস্থানে অবস্থিত ছিল । বাঙ্গলার দেউলগুলি বাঙ্গলার চালা ঘরের অনুকরণে চারাচালা-বিশিষ্ট । অধিক বারিপাতে এই প্ৰকার ছাদই জলধারা নিষ্কাশনে সর্ববাপেক্ষ উপযুক্ত। অবশ্য এই প্ৰকার ঢালু চালের ছাদের মন্দিরাদি নিৰ্ম্মাণ পৃথিবীর সর্বত্রই দেখা যায়, তথাপি বাঙ্গলার স্থাপত্যেরও একটা অভিনব বিশেষত্ব আছে । যখন বিধৰ্ম্মীদের বিশেষতঃ কালাপাহাড়ের নিৰ্ম্মম অত্যাচারে হিন্দুৱ প্ৰসিদ্ধ প্ৰসিদ্ধ তীর্থে বিশ্বের অপূৰ্ব সৌন্দৰ্য্যময় শিল্পের নিদর্শন দেব-দেউল ও মূৰ্ত্তিগুলি বিধ্বস্ত হইতেছিল, তখন ও তাহার পরবর্তী যুগে বাঙ্গলার পল্লিগ্রামে শিল্পীরা তঁহাদের চিরনূতন উদ্ভাবনী শক্তির পরিচয় গ্রামের দেব-দেউল-নিৰ্ম্মাণে প্ৰকাশ করিয়াছিলেন। তাঁহারই এক প্রকৃষ্ট নিদর্শন মথুরাপুরের দেউল । ফরিদপুর জিলার রাজবাড়ী মহকুমায় মথুরাপুর গ্রামে একটি কারুকাৰ্য্যময় সুন্দর দেউলের সন্ধান পল্লী-শিল্পের দরদী। Rbo