পাতা:ভারতের দেব-দেউল - জ্যোতিশ্চন্দ্র ঘোষ.pdf/২০৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারতের দেব-দেউল শিশুক্ৰোড়ে জননীর মূৰ্ত্তি নারীর মাতৃত্বের এক অপরূপ ছবি। প্ৰস্তর-ক্ষোদিত বাৎসল্য-রাসের উন্মেষক ভারতীয় মূৰ্ত্তিগুলি ইয়োরোপীয় ম্যাডোনা মূৰ্ত্তি অপেক্ষা কোন অংশে নিকৃষ্ট নহে। এই মূৰ্ত্তিগুলি যেমন স্নেহময় তেমনি মনোরম। এই মাতৃ-মূৰ্ত্তিগুলি প্রায়ই কৃষ্ণ-যশোদার মূৰ্ত্তি বলিয়া পরিচিত ও পূজিত হয়। স্বৰ্গীয় রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় মহাশয় তাহার বাঙ্গালার ইতিহাসে প্ৰথম খণ্ডে ও শ্ৰীযুক্ত সুশীলচন্দ্ৰ বন্দ্যোপাধ্যায় ‘রূপম পত্রিকার ১৯২০ সালের এপ্রিল সংখ্যায় মাতৃমূৰ্ত্তি-সম্বন্ধে বিশেষ আলোচনা করিয়া দেখাইয়াছেন যে, ভারতীয় শিল্পিগণ বাৎসল্য-রস-সৃষ্টিতে বিশ্বের শিল্পিগণের মধ্যে শ্রেষ্ঠ আসনেরই অধিকারী । শুধু স্ত্রী মূৰ্ত্তি কেন, তৈজসপত্র, আসবাব, অলঙ্কার, বাদ্যযন্ত্র ও নৃত্যকলা-বিষয়ক চিত্রগুলিও অতি নিপুণতার সহিত ক্ষোদিত হইয়াছে। এই মূৰ্ত্তিগুলি মনোনিবেশ করিয়া দেখিলে যে শুধু উড়িষ্যার সভ্যতার ও সামাজিক রীতিনীতির পরিচয় পাওয়া যায় তাহা নহে, উড়িয়া সীমন্তিনীগণের ললিতকলায় পারদর্শিতার ছবিও চিত্তে উদ্ভাসিত হয়। তাই রবীন্দ্রনাথ ভুবনেশ্বরের মূৰ্ত্তি-সম্বন্ধে বলিয়াছেন— “এখানে মানুষ দেবতার একেবারে যেন গায়ের উপর আসিয়া পড়িয়াছে। তাও যে ধূলা ঝাড়িয়া আসিয়াছে, তাও নয়। গতিশীল, কৰ্ম্মরত, ধূলিলিপ্ত সংসারের প্রতিকৃতি নিঃসঙ্কোচে সমুচ্চ হইয়া উঠিয়া দেবতার প্রতিমূৰ্ত্তি আচ্ছন্ন করিয়া রহিয়াছে । * * * X Vo