পাতা:ভারতের দেব-দেউল - জ্যোতিশ্চন্দ্র ঘোষ.pdf/৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারতের দেব-দেউল চুরাশিটি ফোকরের মধ্যে তিনটি প্রবেশ-পথরূপে ব্যবহৃত হইতেছে। পশ্চিম দিকে দুইটি প্রবেশ-পথ এবং পূর্ব-দক্ষিণ কোণে আর একটি। বাকী একাশিটি মঠে মুৰ্ত্তি বসাইবার জন্য বেদী বা আসন প্ৰস্তুত রহিয়াছে। এই বেদীগুলি ৩ ৫” লম্বা, ১' ৮” চওড়া ও এক ফুট উচ্চ। স্তম্ভগুলির আয়তন ১০২” সম-চতুষ্কোণ এবং সেগুলি ৩ ৭” অন্তর অবস্থিত। এই বৃত্তাকার দালানটি নিশ্চয় মূল মন্দিরকে বেষ্টন করিয়া নিৰ্ম্মিত হইয়াছিল। সেই মূল মন্দিরের আকার জানা না থাকিলেও ইহা যেন তাহারই সভামণ্ডপ বলিয়া মনে হয়। প্ৰতি ফোকরে যে সমস্ত মূৰ্ত্তি স্থাপিত আছে তাহার অধিকাংশ বসা অবস্থায়, কয়েকটি মাত্ৰ দণ্ডায়মান-ভাবে নিৰ্ম্মিত । বসা মূৰ্ত্তিগুলি ৪, ২” উচ্চ এবং ২। ৬" চওড়া। সবগুলিই দেবীমূৰ্ত্তি, অধিকাংশই চতুভূজা, কেবল একটি শিব ও একটি গণেশের মূৰ্ত্তিই দেবমূৰ্ত্তি। দেবীমূৰ্ত্তিগুলির গঠন-ভঙ্গিমা, বিশেষতঃ কটিদেশের ও বক্ষের গঠন, যেমন মনোরম তেমনই সুঠাম । ইহাদের অলঙ্কার ও বসনের খোদাই-কাৰ্য্য অত্যন্ত সূক্ষম। প্রত্যেক মূৰ্ত্তির বলয়, কঙ্কণ, কণ্ঠহার, হাঁসুলি, সাতনর, মুক্তাদাম, তাবিজ, অনন্ত, কাণবালা, মেখলা, কোমরপট্টি, চন্দ্ৰহার, মল, চরণপদ্ম, পাজর, সিঁথি, অঙ্গুরীয় প্রভৃতি অলঙ্কারগুলি সে যুগের নারীর অলঙ্কারপ্রিয়তা ও শিল্পীর দক্ষতা প্ৰকাশ করিতেছে। প্ৰত্যেকটি দেবীর মুকুট বা শিরোভূষণের পরিকল্পনা ভিন্ন ভিন্ন রূপ। শিল্পীর বাটালির ঘায়ে বস্ত্রের ভঁাজ ও পাড় অতি সুস্পষ্ট হইয়া উঠিয়াছে। সেই যুগের সমাজের, সভ্যতা ও পরিচ্ছদপরিধানের রীতি এই মূৰ্ত্তিগুলির মধ্যে মূৰ্ত্ত হইয়াছে। G8