অধিকতর মুক্ত অথচ ঐক্যবদ্ধ ক্রিয়ায় সহায় হওয়া, তাহা আর হইয়া উঠিত না। সাম্রাজিক রাজতন্ত্র স্বাধীন জাতীয় সভাগুলিরও শক্তি হ্রাস করিয়া দিয়াছিল, এবং তাহার ফলে মূল সাম্প্রদায়িক স্বতন্ত্র অনুষ্ঠানগুলি এক ঐক্যবদ্ধ শক্তির অঙ্গ না হইয়া পরস্পর হইতে বিচ্ছিন্ন হইয়া ভেদেরই সৃষ্টি করিয়াছিল। পল্লী সমাজ (Village Community) নিজের সজীব শক্তি কতকটা বজায় রাখিয়াছিল, কিন্তু ঊর্দ্ধতম কর্ত্তৃপক্ষের সহিত তাহার কোন জীবন্ত সম্বন্ধ ছিল না, এবং বৃহত্তর জাতীয়তা বোধ হারাইয়া যে-কোন দেশী বা বিদেশী শাসন তাহার নিজের স্ব-পর্য্যাপ্ত সঙ্কীর্ণ জীবনকে সম্মান করিত তাহাকেই স্বীকার করিয়া লইতে প্রস্তুত ছিল। ধর্ম্মসঙ্ঘগুলির মধ্যেও এই রূপ ভাব আসিয়া পড়িয়াছিল। জাতিভেদ কোনও প্রকৃত প্রয়োজন ব্যতীত অথবা দেশের আধ্যাত্মিক বা অর্থনীতিক প্রয়োজনের সহিত কোনও সম্বন্ধ ব্যতীত সংখ্যায় বাড়িয়া উঠিয়া কেবল অলঙ্ঘ্য আচারমূলক বিভাগে পরিণত হইল, এইভাবে সে-গুলি দেশের মধ্যে কেবল ভেদ বিরোধেরই সৃষ্টি করিল, পূর্ব্বের ন্যায় আর সমগ্র জাতীয় জীবনের সুসমঞ্জস ক্রিয়ার অঙ্গ স্বরূপ রহিল না। ইহা সত্য নহে যে, প্রাচীন ভারতে জাতিবিভাগ দেশের মিলিত জীবনের পরিপন্থী ছিল, কিম্বা পরবর্ত্তীকালেও তাহা সাক্ষাৎভাবে রাজনীতিক দ্বন্দ বা অনৈক্যের সৃষ্টি করিত (যদিও শেষ-
পাতা:ভারতের রাষ্ট্রনীতিক প্রতিভা - অরবিন্দ ঘোষ (১৯২৫).pdf/১২৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০৬
ভারতের রাষ্ট্রনীতিক প্রতিভা