পাতা:ভারতের রাষ্ট্রনীতিক প্রতিভা - অরবিন্দ ঘোষ (১৯২৫).pdf/১৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভারতীয় ঐক্যসাধন সমস্যা
১১৭

যে স্বাধীন প্রাণময় বৈচিত্রপূর্ণ জীবনে জাতির মন ও প্রকৃতির সত্য প্রকাশ, তাহা ক্ষুণ্ণ হওয়ায় এই সবের দ্বারা শেষ পর্য্যন্ত সে ক্ষতির আর পূরণ হয় নাই।

 আরও অশুভ এক পরিণাম হইয়াছিল ধর্ম্মের উচ্চ আদর্শ হইতে পতন। রাজ্যের সহিত রাজ্য প্রভুত্বের জন্য দ্বন্দে প্রবৃত্ত থাকায়, কূটরাজনীতির (Machiavellian Staecraft) অভ্যাস পূর্ব্বেকার মহত্তর নৈতিক আদর্শ সকলের স্থান গ্রহণ করিল, দুরন্ত বিজয়াকাঙ্খাকে দমন করিবার মত কোন আধ্যাত্মিক বা নৈতিক প্রতিবন্ধক রহিল না, এবং রাজনীতি ও শাসননীতিতে জাতির মন অনেকটা রুঢ় ও নীচ হইয়া পড়িল; মৌর্য্যযুগের কঠোর দণ্ডবিধি আইনে এবং অশোক কর্ত্তৃক উড়িষ্যাবিজয়ে নৃশংস রক্তপাতে ইতিমধ্যেই তাহার পরিচয় পাওয়া গিয়াছিল। এই অবনতির গতি ধর্ম্মভাব ও উচ্চ বুদ্ধিমত্তার দ্বারা নিরুদ্ধ থাকায় আরও প্রায় এক সহস্র বৎসরকাল চরম অবস্থার পৌঁছিতে পারে নাই; ইহার পূর্ণ বেগটি আমরা দেখিতে পাই কেবল চুড়ান্ত অধঃপতনের যুগে, তখন পরস্পরকে অবাধ আক্রমণ, রাজা ও নেতাগণের উচ্ছৃঙ্খল অহমিকা, রাষ্ট্রনীতিক বুদ্ধির এবং কার্য্যকরীভাবে ঐক্যবদ্ধ হইবার শক্তির একান্ত অভাব, এক সাধারণ দেশপ্রেমের অভাব, এবং কোন রাজা গিয়া কে রাজা হইল সে-বিষয়ে জনসাধারণের চির-উদাসীনতা, এই