পাতা:ভারতের রাষ্ট্রনীতিক প্রতিভা - অরবিন্দ ঘোষ (১৯২৫).pdf/১৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৩০
ভারতের রাষ্ট্রনীতিক প্রতিভা

রাষ্ট্রনীতিক প্রতিভা পুরাতন অবস্থা-পরম্পরার মধ্যে নবজীবনের ভিত্তি স্থাপন করিবার শেষ প্রয়াস করিয়াছিল, কিন্তু কোনটিই কার্য্যতঃ সমস্যাটির সমাধান করিবার মত উপযুক্ত হইয়া উঠিতে পারে নাই। রামদাসের মহারাষ্ট্র-ধর্ম্মের আদর্শে অনুপ্রাণিত এবং শিবাজী কর্ততৃক সংগঠিত মারাঠা অভ্যুত্থান ছিল প্রাচীন আদর্শ ও অনুষ্ঠানের যাহা কিছু জানা বা বুঝা যায় তাহাই পুনঃ সংস্থাপনের চেষ্টা; কিন্তু প্রারম্ভে অধ্যাত্ম প্রেরণা ও প্রজাতান্ত্রিক শক্তি সকলের সাহায্য পাওয়া সত্ত্বেও তাহা কৃতকার্য্য হয় নাই, বস্তুতঃ অতীতকে এইরূপে ফিরাইয়া আনিবার সকল চেষ্টাই ব্যর্থ হইতে বাধ্য। পেশোয়াগণ তাঁহাদের সকল প্রতিভা সত্ত্বেও প্রতিষ্ঠাতার দৃষ্টিটি লাভ করিতে পারেন নাই। তাহারা কেবল এক সামরিক ও রাষ্ট্রনীতিক সমবায়েরই (Confederacy) সৃষ্টি করিতে পারিয়াছিলেন। আর তাহাদের সাম্রাজ্যস্থাপনের চেষ্টা কৃত্যকার্য্য হয় নাই কারণ তাহার মূলে ছিল প্রাদেশিকতা, তাহা নিজের সঙ্কীর্ণ গণ্ডী ছাড়াইয়া উঠিতে পারে নাই, সমগ্র ভারতকে ঐক্যবদ্ধ করিবার জীবন্ত আদর্শে উদ্বুদ্ধ হইতে পারে নাই। অপর পক্ষে শিখ্ খাল্‌সা ছিল এক আশ্চর্য্য রকমের মৌলিক ও নূতন সৃষ্টি, তাহার দৃষ্টি অতীতের দিকে নহে, ভবিষ্যতের দিকেই প্রসারিত ছিল।