পাতা:ভারতের রাষ্ট্রনীতিক প্রতিভা - অরবিন্দ ঘোষ (১৯২৫).pdf/২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রাচীন ভারতে সমাজ ও রাষ্ট্র

 প্রাচীন আর্য্যজাতির মধ্যে যে রাষ্ট্রতন্ত্র প্রচলিত ছিল, এবং যাহা মানব-সমাজবিকাশের এক অবস্থায় সকল দেশের মানুষের মধ্যেই সাধারণভাবে প্রচলিত ছিল বলিয়া মনে হয়, সেই রাষ্ট্রতন্ত্রেরই একটা বিশেষ রূপ লইয়া ভারতের রাষ্ট্রনীতিক ইতিহাস আরম্ভ হয়। কুল বা গোষ্ঠী লইয়াই এই তন্ত্র গঠিত ছিল এবং ইহার মূল ছিল কুল বা গোষ্ঠীর অন্তর্গত সকল মনুষ্যের মধ্যে সাম্য। প্রথমাবস্থায় কোন বিশেষ স্থানে এই কুল আবদ্ধ থাকিত না, তখনও স্থান হইতে স্থানান্তরে সরিয়া যাইবার প্রবল আগ্রহ ছিল, এবং কোন স্থানে যে কুল বাস করিত, সেই কুলের নাম অনুসারেই সেই স্থানের নাম হইত, যেমন ‘কুরুদেশ’ বা শুধু ‘কুরু’, মালব দেশ বা শুধু মালব। যখন আর্য্যদের যাযাবর প্রবৃত্তি লোপ পায় এবং তাহারা নির্দ্দিষ্ট স্থানে স্থায়িভাবে বাস করিতে আরম্ভ করে, তখনও কুল বা গোষ্ঠীপ্রথা অক্ষুণ্ণ থাকে; কিন্তু তখন পল্লী-সমাজই হয় সেই রাষ্ট্রতন্ত্রের মূল আকার বা কেন্দ্র। জনসাধারণ সাম্প্রদায়িক বিষয়ের আলোচনা করিবার নিমিত্ত অথবা যজ্ঞ ও ধর্ম্মানুষ্ঠানের নিমিত্ত অথবা যুদ্ধায়োজনের নিমিত্ত সভায় সমবেত হইত, সেই সভার নাম ছিল “বিশা।” এই সভাই ছিল জনসাধারণের সমবেত শক্তির প্রতীক এবং বহুকাল এই সভার ভিতর দিয়াই সম্প্রদায়ের সাধারণ জীবন পরিচালিত হইত। এই সভার