পাতা:ভারতের রাষ্ট্রনীতিক প্রতিভা - অরবিন্দ ঘোষ (১৯২৫).pdf/২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভারতের রাষ্ট্রনীতিক প্রতিভা

শীর্ষস্থানীয় এবং জনসাধারণের প্রতিনিধিরূপে ছিলেন রাজা। যখন এই রাজার পদ পুরুষানুক্রমিক হয়, তখনও বহুকাল রাজার অভিষেকে জনসাধারণ কর্ত্তৃক তাঁহাকে অনুমোদিত ও নির্ব্বাচিত হইতে হইত। যজ্ঞরূপ ধর্ম্মানুষ্ঠানের বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে পুরোহিতশ্রেণীর উদ্ভব হয়, তাঁহারা যজ্ঞের অনুষ্ঠানে অভ্যস্ত ছিলেন এবং বাহ্যানুষ্ঠানের পশ্চাতে যে নিগূঢ় আধ্যাত্মিক তত্ত্ব রহিয়াছে, সে সম্বন্ধে অভিজ্ঞ ছিলেন, এই ভাবেই মহান্ ব্রাহ্মণতন্ত্রের সূত্রপাত হয়। প্রথম প্রথম এই সকল পুরোহিত পুরুষানুক্রমিক ছিলেন না, তাঁহারা অন্যান্য বৃত্তিও অনুসরণ করিতেন এবং তাঁহারা সাধারণ জীবনে জনসাধারণেরই অনুরূপ ছিলেন। এই যে সহজ স্বাধীন স্বাভাবিক সমাজতন্ত্র, ইহাই সমগ্র আর্য্য ভারতে প্রচলিত ছিল বলিয়া মনে হয়।

 এই আদিম সমাজতন্ত্রের পরবর্ত্তী বিকাশ কতক দূর পর্য্যন্ত অন্যান্য সম্প্রদায়ের ন্যায়ই হইয়াছে, কিন্তু সেই সঙ্গে এখানে এমন কতকগুলি বৈশিষ্ট্যের উদ্ভব হইয়াছে, যাহাতে ভারতীয় সভ্যতার রাষ্ট্রনীতিক, অর্থনীতিক ও সামাজিক ধারা অন্যান্য দেশ হইতে বিভিন্ন হইয়া পড়িয়াছে। বংশানুক্রমনীতি অতি প্রাচীনকালেই ভারতে স্পষ্ট হইয়া উঠে এবং ক্রমশঃ উহা এমন প্রাধান্য লাভ করে যে, সর্ব্বত্র সকল সঙ্ঘ ও অনুষ্ঠানের উহাই ভিত্তি