পাতা:ভারতের রাষ্ট্রনীতিক প্রতিভা - অরবিন্দ ঘোষ (১৯২৫).pdf/২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রাচীন ভারতে সমাজ ও রাষ্ট্র
১১

সকল কার্য্য, সকল চেষ্টার ভিতর দিয়া দিব্য অধ্যাত্মজীবনের বিকাশ করাই যে ভারতীয় জীবনের মূল বৈশিষ্ট্য হইয়াছে, তাহার মূলই এই ঋষিরা। পরবর্ত্তী কালে আমরা দেখিতে পাই, স্মার্ত্ত ব্রাহ্মণরা সমাজে তৎকালে প্রচলিত রীতি-নীতি সংগ্রহ করিয়া সেই সকলকে সেই প্রাচীন ঋষিদের নামে চালাইয়া দিয়াছেন এবং এই ভাবে মনুসংহিতা, পরাশরসংহিতা প্রভৃতির উদ্ভব হইয়াছে। কিন্তু ভারতের সমাজে ও রাষ্ট্রে পরে যে পরিবর্ত্তনই হউক, এই যে মূল বৈশিষ্ট্য ধর্ম্ম ও আধ্যাত্মিকতা, ইহা চিরদিনই ভারতবাসীর জীবনে ইহার প্রভাব বিস্তার করিয়াছে এবং অবশেষে যখন উহা প্রাণহীন বিধিনিষেধ ও আচার-ব্যবহারে পরিণত হয়, তখনও প্রকৃত আধ্যাত্মিকতা সর্ব্বদাই জীবন্তভাবে পরিস্ফুট হইবার চেষ্টা করিয়াছে।

 রাষ্ট্রনীতির দিক দিয়া সেই আদিম ব্যবস্থার বিকাশ ভারতের ভিন্ন ভিন্ন অংশে ভিন্ন ভিন্ন ভাবে হইয়াছে। অন্যান্য দেশের ন্যায় এই বিকাশের সাধারণ গতি হইয়াছে রাজতন্ত্রের দিকে, রাষ্ট্রের শাসন ও পরিচালনকার্য্য ক্রমশঃ জটিল হইয়াছে এবং কেন্দ্ররূপে রাজাই এই শাসনতন্ত্রের অধিপতি হইয়াছেন; রাষ্ট্রের এই রাজতন্ত্র রূপ কালক্রমে প্রচলিত এবং সর্ব্বত্র প্রবর্ত্তিত হয়। কিন্তু এক বিপরীত প্রচেষ্টা এই রাজতন্ত্রের বিস্তারকে বহু দিন বাধা দিয়া আটক করিয়া রাখিয়া