পাতা:ভারতের রাষ্ট্রনীতিক প্রতিভা - অরবিন্দ ঘোষ (১৯২৫).pdf/৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২০
ভারতের রাষ্ট্রনীতিক প্রতিভা

জন্য বিচার-সভা আহ্বান করিতে হইত [বৌদ্ধগণের প্রসিদ্ধ বিচারসভাসমূহ ইহার দৃষ্টান্ত], অথবা বিভিন্ন ধর্ম্মের ব্যাখ্যাতৃগণের মধ্যে তর্ক ও বিচারের ব্যবস্থা করিয়া দেওয়া হইত এবং যাহা সিদ্ধান্ত হইত, তাহাই গ্রহণ করা হইত। রাজা ব্যক্তিগতভাবে কোনও বিশেষ মতবাদের পক্ষপাতী হইলে ঐ মতবাদের প্রচারে খুবই সুবিধা হইত বটে, কিন্তু রাজা হিসাবে তাঁহাকে সকল প্রচলিত ধর্ম্মমত ও ধর্ম্মসম্প্রদায়কেই সম্মান ও সমর্থন করিতে হইত এবং এ বিষয়ে যথাসম্ভব নিরপেক্ষ থাকিতে হইত। এই জন্যই দেখিতে পাওয়া যায় যে, বৌদ্ধ ও ব্রাহ্মণ সম্রাট্‌গণ দুইটি বিরোধী ধর্ম্ম-সম্প্রদায়কেই সমর্থন করিয়াছিলেন। কখনও কখনও, বিশেষতঃ দক্ষিণদেশে, রাজা কর্ত্তৃক ধর্ম্মব্যাপারে কম-বেশী অত্যাচার সাধিত হইয়াছে, কিন্তু ইহা অধর্ম্মের লক্ষণ, ব্যাভিচার, সাময়িক তীব্র উত্তেজনার ফল, ইহা কখনই বহুদূরব্যাপী বা বহুকালস্থায়ী হয় নাই। সাধারণতঃ ভারতের রাষ্ট্রীয় প্রথায় ধর্ম্ম সম্বন্ধে অসহনীয়তা বা অত্যাচারের স্থান ছিল না, এবং কোনও রাজা বা রাষ্ট্র যে ইহা নীতিস্বরূপ অনুসরণ করিবে, ইহা ছিল কল্পনারও অতীত।

 যেমন ধর্ম্মব্যাপারে, তেমনই সামাজিক ব্যাপারেও লোকের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হইত না। রাজা আইন করিয়া সমাজের বিধি-ব্যবস্থা পরিবর্ত্তন করিয়াছেন,