পাতা:ভারতের রাষ্ট্রনীতিক প্রতিভা - অরবিন্দ ঘোষ (১৯২৫).pdf/৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রাচীন ভারতে সমাজ ও রাষ্ট্র
২১

এরূপ দৃষ্টান্ত প্রায়ই দেখা যায় না। যখন এরূপ হইয়াছে, তখন যাহাদের জন্য পরিবর্ত্তন— তাহাদের সহিত পরামর্শ করিয়া, তাহাদের মত লইয়াই করা হইয়াছে। বহুকাল বৌদ্ধ-প্রভাবে বাঙ্গালা দেশে জাতিভেদ বিশৃঙ্খল হইয়া যাইবার পর সেনরাজগণ যখন পুনরায় জাতিভেদের প্রবর্ত্তন করেন, তখন এই ভাবে লোকের সহিত পরামর্শ করিয়াই করিয়াছিলেন। সমাজের সংস্কার বা পরিবর্ত্তন ইচ্ছামত উপর হইতে করা হইত না, কিন্তু ভিতর হইতে স্বভাবতঃ পরিবর্ত্তন ও বিকাশ হইত; কুল বা বংশকে অথবা বিশেষ বিশেষ সম্প্রদায়কে আপন আপন আচারের পরিবর্ত্তন ও বিকাশ করিতে যে স্বাধীনতা দেওয়া ছিল, প্রধানতঃ সেই স্বাধীনতার ফলে ভিতর হইতেই স্বাভাবিকভাবে সমাজের পরিবর্ত্তন ও বিকাশ হইত।

 রাজ্যশাসন-ব্যাপারেও এইরূপেই রাজার শক্তি জাতির সনাতন আদর্শের দ্বারা, ধর্ম্মের দ্বারা সীমাবদ্ধ ছিল। প্রধান প্রধান রাজস্ব ব্যাপারে রাজা এক নির্দ্দিষ্ট অংশের বেশী কর ধার্য্য করিতে পারিতেন না; অন্যান্য ব্যাপারে জনসাধারণের প্রতিনিধিমূলক অনুষ্ঠানের মত লইয়াই রাজাকে কর নির্দ্ধারণ করিতে হইত এবং সকল সময়েই ইহা সাধারণ নীতি ছিল যে, রাজার যে দেশ শাসন করিবার অধিকার, তাহার ভিত্তি হইতেছে জনসাধারণের সন্তোষ ও সম্মতি। আমরা দেখিব যে, এটি কেবলমাত্র একটি