পাতা:ভারতের রাষ্ট্রনীতিক প্রতিভা - অরবিন্দ ঘোষ (১৯২৫).pdf/৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৪
ভারতের রাষ্ট্রনীতিক প্রতিভা

এক জন অপ্রিয় রাজাকে সাধারণে এইরূপ রাজ্য ছাড়িয়া চলিয়া যাইবার ভয় দেখাইয়াছিল; জনসাধারণের সভায় ঘোষিত হইয়াছিল যে, রাজাকে কেহ কোনরূপ সাহায্য করিলে বিশ্বাসঘাতকতা হইবে। তবে আরও একটি প্রচলিত প্রতীকার ছিল,—মন্ত্রিগণের পরিষদ্ অথবা জনসাধারণের পরিষদ্ কর্ত্তৃক রাজাকে রাজ্যচ্যুত করা। এইরূপে ভারতে যে রাজতন্ত্র গঠিত হইয়াছিল, তাহা কার্য্যতঃ ছিল সংযত, কার্য্যকুশল এবং কল্যাণকর। যে কার্য্যের ভার ইহার উপর অর্পিত ছিল, তাহা সুচারুভাবেই সম্পাদিত হইত এবং স্থায়ীভাবে ইহা জনপ্রিয় হইয়া উঠিয়াছিল। যাহাই হউক, রাজতন্ত্র ছিল কেবল এক প্রকারের রাষ্ট্রতন্ত্র। ইহা লোকানুমোদিত ও প্রভাবসম্পন্ন ছিল বটে, কিন্তু প্রাচীন ভারতে গণতন্ত্রেরও অস্তিত্ব হইতে আমরা বুঝিতে পারি যে, ভারতের রাষ্ট্র ও সমাজগঠনের রাজতন্ত্রই অপরিহার্য্য অঙ্গ নহে। আমরা যদি রাজতন্ত্রের আলোচনা করিয়াই ক্ষান্ত হই, তাহা হইলে ভারতের রাষ্ট্রব্যবস্থার যাহা মূলনীতি, তাহা ধরিতে পারিব না। রাজতন্ত্রের পশ্চাতে ভিত্তিস্বরূপ কি ছিল, তাহার সন্ধান করিলেই ভারতের রাষ্ট্রগঠনের মূলস্বরূপ আমাদের গোচর হইবে।