পাতা:ভারতের রাষ্ট্রনীতিক প্রতিভা - অরবিন্দ ঘোষ (১৯২৫).pdf/৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৮
ভারতের রাষ্ট্রনীতিক প্রতিভা

নীচের প্রাকৃত জীবন, তাহার স্ফূর্ত্তি ও বিকাশসাধন করিয়াই মানুষের অধ্যাত্মজীবন লাভ করা সম্ভব। সকলের উপর এই যে অধ্যাত্ম আদর্শ, ভারত ইহা কখনও বিস্মৃত হয় নাই, যদিও রাষ্ট্র ও সমাজের গঠনে অনেক সময়েই বহু বাহ্য পরিবর্ত্তন করা নিতান্ত আবশ্যক হইয়াছে। কিন্তু সমাজ-জীবনকে মানুষের প্রকৃত আত্মার অভিব্যক্তি করিয়া তোলা, মানুষের মধ্যে যে অধ্যাত্মসত্তা রহিয়াছে সমাজের বাহ্যজীবনে তাহার কোন শ্রেষ্ঠ বিকাশসাধন করা সাতিশয় কঠিন; ধর্ম্ম, চিন্তাসম্পদ, শিল্পকলা, সাহিত্য প্রভৃতি মনের ব্যাপারে আধ্যাত্মিকতার প্রকাশ করা অপেক্ষাকৃত অনেক বেশী সহজ এবং যদিও এই সকল বিষয়ে ভারত অতি উচ্চ স্তরে উঠিতে পারিয়াছিল, বাহ্য সামাজিক জীবনে আত্মার নিতান্ত আংশিক প্রকাশ করা এবং নিতান্ত অসম্পূর্ণ পরীক্ষা করা ছাড়া আর বেশী কিছু করা সম্ভব হয় নাই। নানা রূপকের (Symbolism) ভিতর দিয়া আধ্যাত্মিকতার সাধারণ প্রভাব, জীবনের সকল স্তরে অধ্যাত্ম লক্ষ্যের স্পর্শ, সমাজ-জীবনের একটি বিশিষ্ট ছাঁচ, অধ্যাত্ম আদর্শের অনুকূল অনুষ্ঠানসমূহের সৃষ্টি—কেবলমাত্র এইগুলিই কার্য্যে পরিণত করা সম্ভব হইয়াছিল। ভারতীয় শিক্ষা-দীক্ষায় অর্থ ও কাম মানব-জীবন ও কর্ম্মের দুইটি প্রাথমিক উদ্দেশ্য বলিয়া স্বীকৃত হইয়াছিল