পাতা:ভারতের রাষ্ট্রনীতিক প্রতিভা - অরবিন্দ ঘোষ (১৯২৫).pdf/৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভারতীয় রাষ্ট্র-ব্যবস্থার মূলনীতি ও স্বরূপ
৩৫

সমষ্টি-আত্মার যে জীবন তাহা বিনষ্ট হয়। বৈজ্ঞানিক বুদ্ধির এই যে ভুল, যান্ত্রিক পদ্ধতির গুরু চাপে প্রাণের ও আত্মার সহজোপলব্ধির ক্রিয়াকে নিগ্রহ করা, এইটিই য়ুরোপের দুর্ব্বলতা, ইহাই য়ুরোপের আশাকে প্রতারিত করিয়াছে এবং য়ুরোপকে তাহার নিজেরই উচ্চতর আদর্শসমূহের প্রকৃত সিদ্ধিতে উপনীত হইতে দেয় নাই।

 যেমন ব্যষ্টিগত মানবজীবনে, তেমনই সমষ্টিগত সামাজিক জীবনে তৃতীয়স্তরে উপনীত হইয়াই, মানুষের চিন্তা যে সব আদর্শকে প্রথমে ধরিয়াছে ও পোষণ করিয়াছে তাহাদের প্রকৃত মূল কোথায় এবং সত্যস্বরূপ কি তাহা জানিতে পারা যায় এবং সেগুলিকে বস্তুতঃ কিরূপে কার্য্যে পরিণত করা যাইতে পারে তাহারও উপায় ও সর্ত্তসকল জানিতে পারা যায়, সর্ব্বাঙ্গসুন্দর সিদ্ধ সমাজ কেবল সুদূর কল্পনা বা স্বপ্নমাত্র থাকে না। যত দিন না সেই তৃতীয় স্তরে পৌঁছান যাইতেছে, তত দিন আদর্শ সমাজ ভাস্বর মেঘের ন্যায় কেবল দূর হইতে দূরেই সরিয়া যাইবে, মানুষ তাহার দিকে ধাবিত হইয়া সর্ব্বদা বৃত্তাকারে ঘুরিবে; সর্ব্বদা তাহা মানুষের আশাকে বঞ্চিত করিবে, মানুষ ধরি আশাকে ধরি ধরি করিয়াও তাহাকে ধরিতে পারিবে না। সেই তৃতীয় অবস্থা আসিবে তখনই, যখন মানুষ সমষ্টিগত সত্তায় আরও গভীরভাবে জীবনযাপন করিতে আরম্ভ