পাতা:ভারতের রাষ্ট্রনীতিক প্রতিভা - অরবিন্দ ঘোষ (১৯২৫).pdf/৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪২
ভারতের রাষ্ট্রনীতিক প্রতিভা

ছিল শুধু তাহাই নহে, এ সব কতকটা পবিত্র ও পূজার্হ বলিয়াই পরিগণিত হইত।

 প্রাচীন ভারতীয়গণ বুঝিয়াছিলেন যে, প্রত্যেক ব্যক্তি যদি যথাযথভাবে স্বধর্ম্মের অনুষ্ঠান করে, নিজের প্রকৃতির এবং নিজের শ্রেণীর বা জাতির প্রকৃতির সত্যধারা ও আদর্শ অনুসরণ করে এবং সেইরূপ প্রত্যেক শ্রেণী, প্রত্যেক সঙ্ঘবদ্ধ সমষ্টি-জীবনও যদি স্বধর্ম্মের, স্বীয় প্রকৃতির অনুসরণ করে, তাহা হইলেই বিশ্বজগতের যেমন সুশৃঙ্খলা রক্ষিত হয়, মানব-জীবনেও সেইরূপ শৃঙ্খলা রক্ষিত হয়। পরিবার, কুল, জাতি (caste), শ্রেণী, সামাজিক, আধ্যাত্মিক, শ্রমিক ও অন্যবিধ সঙ্ঘ, নেশন (nation), জনসমূহ (people), এই সবই হইতেছে জীবন্ত সমষ্টিসত্তা, ইহারা নিজ নিজ ধর্ম্মের বিকাশ করে এবং সেই ধর্ম্মের অনুসরণ করিলেই তাহারা রক্ষা পায়, সুস্থভাবে টিকিয়া থাকিতে এবং সুচারুভাবে কর্ম্ম করিতে পারে। আবার পদমর্য্যাদাজনিত ও অন্যের সহিত সম্বন্ধজনিত কর্ত্তব্যধর্ম্ম আছে, দেশকালের অবস্থা অনুযায়ী যুগধর্ম্ম আছে, সার্ববজনীন রিলিজন্[১] ও নৈতিক ধর্ম্ম আছে—


  1. ইংরাজীতে রিলিজন্ (religion) বলিতে যাহা বুঝায়, ভারতে “ধর্ম্ম” তাহা অপেক্ষা ব্যাপক অর্থে ব্যবহৃত হয়।—রিলিজন্ ধর্ম্মের একটা দিক বা অঙ্গমাত্র। সামাজিক, নৈতিক, আধ্যাত্মিক সকল প্রকার নীতি ও আদর্শের সাধারণ নাম ধর্ম্ম।