পাতা:ভারতের রাষ্ট্রনীতিক প্রতিভা - অরবিন্দ ঘোষ (১৯২৫).pdf/৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫২
ভারতের রাষ্ট্রনীতিক প্রতিভা

ইঙ্গিত দিতেছে, তখন হয়ত তাহারই অনুগামী হইয়া কমিউন্যাল বা সমষ্টিগত জীবনের তৃতীয় স্তর ও মানবসমাজের অধ্যাত্মভিত্তি আরম্ভ করিবার দিকেই অগ্রসর হইতে পারে। যাহাই হউক, অনুষ্ঠানগুলির সুদীর্ঘ স্থায়িত্ব, এবং তাহারা যে জীবনের আধার ছিল তাহার মহত্ত্ব, নিশ্চয়ই অক্ষমতার পরিচায়ক নহে, বরং তাহা ভারতীয় মণীষার অসাধারণ রাজনীতিক সহজদৃষ্টি ও শক্তিরই পরিচয় দেয়।

 একটি নীতি বরাবর ভারতীয় রাষ্ট্রতন্ত্রের সমুদয় গঠন, বিস্তার ও পুনর্গঠনের মূলে স্থায়িভাবে বিদ্যমান ছিল। সেটি হইতেছে, ভিতর হইতে স্ব-নিয়ন্ত্রিত কমিউন্যাল বা সমষ্টিগত সঙ্ঘবদ্ধ জীবনপ্রণালী:—কেবল মোটের উপর স্ব-নিয়ন্ত্রণ নহে, ভোটের দ্বারা একটা বাহ্য প্রতিনিধিমূলক সভা গঠন করিয়া স্ব-নিয়ন্ত্রণ নহে; এরূপ সভা জাতির কেবল একটা অংশের, রাজনীতিক চিন্তাসম্পন্ন ব্যক্তিগণেরই, প্রতিনিধি হইতে পারে, এবং আধুনিক প্রণালী ইহা অপেক্ষা আর বেশী কিছু করিতে পারে নাই: কিন্তু তাহা ছিল জাতির জীবনের প্রত্যেক স্পন্দনে এবং প্রত্যেক স্বতন্ত্র অঙ্গে স্ব-নিয়ন্ত্রণ (Self-determination)। স্বাধীন সমন্বয়শীল কমিউন্যাল বিধান, ইহাই ছিল তাহার স্বরূপ, এবং তাহার লক্ষ্য ছিল ততটা ব্যক্তিগত স্বাধীনতা নহে, যতটা সমষ্টিগত,