পাতা:ভারতের রাষ্ট্রনীতিক প্রতিভা - অরবিন্দ ঘোষ (১৯২৫).pdf/৮৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভারতীয় রাষ্ট্রবিকাশের ধারা
৭১

সমগ্রভাবে দেখিলে স্পষ্টই বুঝা যায় যে, রাজাধিপত্যে তাহারা ছিল অংশীদার, শাসন-ব্যাপারে তাহাদের অধিকার ছিল স্বতঃসিদ্ধ, এবং যে সব শক্তিপ্রয়োগ সাধারণতঃ তাহাদের কার্য্যের অন্তর্গত ছিল না, অসাধারণ প্রয়োজনের সময়ে তাহারা সে সবও ব্যবহার করিতে পারিত। ইহা বিশেষ প্রণিধানযোগ্য যে, সম্রাট অশোক যখন দেশের ধর্ম্ম-পরিবর্ত্তনের চেষ্টা করিয়াছিলেন, তখন তিনি কেবল রাজানুশাসনের দ্বারাই তাহা করিতে প্রবৃত্ত হন নাই, পরন্তু তিনি সমিতির সহিত পরামর্শ করিয়াছিলেন। অতএব প্রাচীন কালে এই দুইটি সমিতিকে যে রাজ্যের কার্য্য-নির্ব্বাহক বলিয়া এবং প্রয়োজনমত রাজশাসনে বাধা দিবার যন্ত্র বলিয়া বর্ণনা করা হইত, তাহা সম্পূর্ণভাবেই ঠিক বলিয়া মনে হয়।

 এই মহান্ অনুষ্ঠানগুলি কখন বিলুপ্ত হয়? মুসলমান আক্রমণের পূর্বেব, না বিদেশী শাসনের ফলে, তাহা ঠিক জানা যায় না। ভারতীয় রাষ্ট্রের যেরূপ গঠন তাহাতে যদি ইহা এমন কোন ভাবে উপর দিকে শিথিল হইয়া পড়িত, যাহার ফলে রাজার শাসন ও সমাজ-রাষ্ট্র-শরীরের অন্যান্য অনুষ্ঠানের মধ্যে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হইয়া যাইত, এবং রাজা এইরূপ বিচ্ছিন্ন হইয়া ও জাতির বৃহত্তর ব্যাপারগুলিতে অবাধ আধিপত্য লাভ করিয়া ক্রমশঃ বেশী বেশী স্বেচ্ছাচারী হইয়া