পাতা:ভারতের রাষ্ট্রনীতিক প্রতিভা - অরবিন্দ ঘোষ (১৯২৫).pdf/৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভারতীয় রাষ্ট্রবিকাশের ধারা
৮১

বৌদ্ধ ও জৈন ধর্ম্মের অভ্যুত্থানে সেই প্রবৃত্তি স্থায়ী ভাব গ্রহণ করে। বৌদ্ধ ভিক্ষুসম্প্রদায়েই সুসম্বদ্ধ ধর্ম্মসঙ্ঘের পূর্ণ মূর্ত্তি প্রথম বিকসিত হয়। এখানে আমরা দেখিতে পাই যে, বুদ্ধ ভারতীয় সমাজ ও রাষ্ট্রগঠনের সুবিদিত নীতিগুলিই সন্ন্যাসজীবনগঠনে প্রয়োগ করিয়াছিলেন। তিনি যে সম্প্রদায়ের সৃষ্টি করিয়াছিলেন, তাঁহার উদ্দেশ্য ছিল যে, সে সম্প্রদায় হইবে ধর্ম্মসঙ্ঘ, প্রত্যেক মঠ হইবে এক একটি ধর্ম্মমূলক কমিউন্ (Religious commune), তাহা সঙ্ঘবদ্ধ গোষ্ঠীর জীবন যাপন করিবে। বৌদ্ধগণ কর্ততৃক প্রচারিত ধর্ম্মপালনই হইবে তাহার সকল নিয়ম, লক্ষণ ও জীবনযাপন-প্রণালীর ভিত্তি ও আদর্শ। ইহা বুঝিতে বিলম্ব হয় না যে, ঠিক এইটিই ছিল সমগ্র হিন্দু সমাজের মূল নীতি ও আদর্শ। তবে এখানে আধ্যাত্মিক ও কেবল ধর্ম্ম-জীবনের ক্ষেত্র বলিয়া সেটিকে উচ্চতর প্রগাঢ়তা দেওয়া সম্ভব হইয়াছিল। এই সঙ্ঘ ভারতের সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় কম্যুন্যাল অনুষ্ঠানগুলির ন্যায়ই নিজের কার্য্যাদি পরিচালন করিত। ভিক্ষুমণ্ডলী সমিতিতে সমবেত হইয়া ধর্ম্ম সম্বন্ধে বিচার্য্য প্রশ্নের আলোচনা করিত, এবং রিপাবলিকের সভাগৃহগুলির ন্যায় এখানেও ভোটের দ্বারা মীমাংসা করা হইত, তবে যাহাতে অতিমাত্রায় ডেমক্রেটিক প্রণালীর আনুষঙ্গিক দোষগুলি ঘটিতে না পারে, তাহারও প্রতিবিধান করিবার ব্যবস্থা