সূচনা।
শুভ মুহূর্ত্ত
ইংরাজের দুয়ারে ভিক্ষা—আবেদন নিবেদনের নাকি জাত গিয়াছে। সুরেন্দ্রনাথ, মেটা, গোখলে আদি পুরাতন কংগ্রেস নেতারা, ভিক্ষার ঝুলি কাধে গভর্ণমেণ্টের দুয়ারে মাধুকরী করিতেন, তখন তাহার নাম ছিল জাতীয় মহাসভা। ১৯০৭ সালে তিলক ও অরবিন্দ এই দুই নবীন নেতার অধীনে কয়েক হাজার তরুণ গিয়া এই বৈষ্ণবী মহাসভার সুরাট অধিবেশন ভাঙিয়া দেয়। এই ধ্বংস হইতে বর্ত্তমান কংগ্রেসের নবজন্ম—রাজনীতিক মুক্তির বাণী লইয়া, জীবনের নব মন্ত্র গ্রহণ করিয়া।
তিলকের মৃত্যু ও রাজরোষের কবল হইতে পলাইয়া অরবিন্দের প্রবাস গমনে জাতির জয়রথ অন্ধকারের কণ্টকিত পথে প্রবেশ করে, বাংলা দেশ তখন হইতে হিংসার পথে কারাবরণ করিয়া শক্তি ক্ষয় আরম্ভ করে। তাহার পর অহিংসার মন্ত্র লইয়া মহাত্মাজীর আবির্ভাব, দেশবন্ধুর মহাত্যাগে দেশে আবার মুক্ত অবাধ আন্দোলনের জন্ম। অসহযোগকে কর্ম―পন্থা করিয়া মহাত্মাজী সদলবলে জাতীর মহাসভাকে করায়ত্ত করিলেন, ভারতের ভাগ্যরথ আবার ঘর্ঘর রবে দিক নিনাদিত করিয়া চলিতে লাগিল।
বাংলার মনীষা কিন্তু মহাত্মাজীকে সর্ব্বান্তঃকরণে গ্রহণ করিল না। দেশবন্ধু নূতন ধরণের অসহযোগ মন্ত্র লইয়া রাষ্ট্রমণ্ডলীতে প্রবেশ করিবার জন্য স্বরাজ্য-দল গঠন করিতে লাগিলেন।
অসহযোগ আন্দোলনের সমগ্র শক্তি প্রকট হইয়াছিল স্বরাজ্য দলের জয়ে, তাঁহাদের কাউন্সিল প্রবেশের সফলতায়! সে শক্তিও কিন্তু গঠনের পথে জাতির জীবন-তরীর হাল ধরিল না, অসহযোগের ব্যর্থ মন্ত্র উচ্চারণ করিয়াই ক্ষান্ত হইয়া রহিল।
আজ দেশবন্ধু নাই, অসহযোগের নামে বার বার সহযোগের চেষ্টা