বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:ভারত কোন্‌ পথে? – বারীন্দ্রকুমার ঘোষ (১৯৩৬).pdf/১০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ভারত কোন্ পথে?

শক্তির প্রখর সূর্য্য, তখন এই দুইটি মরণোন্মুখ কৃ্ষ্টি সেই জ্যোতির মাঝে সহজেই গেল ডুবে ম্লান হয়ে। তারা যে এক দিন ভারতের ছিল বিজেতা ও প্রভু, অতীতের এই ভুয়া গর্ব্ব ভারতের মুসলমানের মুখ ফিরিয়ে দিয়েছিল পাশ্চাত্যের সভ্যতার এই আলো থেকে তার বিপরীত দিকে। এই পাশ্চাত্য-বিমুখতা উপরন্তু ধর্ম্মের অন্ধ গোঁড়ামীর আকার নেওয়ায় ভারতের মুসলিম জনসাধারণ আজও এত অজ্ঞানে এত কুসংস্কারে আচ্ছন্ন হয়ে আছে। ভগবানের প্রাণদায়ী জ্যোতি এ যুগে যে পথে যে রূপ নিয়ে আসছে, সে হচ্ছে পাশ্চাত্যের জ্ঞান, বিজ্ঞান, ওদের অপূর্ব্ব কর্ম্ম ও গঠন কুশলতা; আজ সুতরাং এই দিক থেকে যে জাতি মুখ ফেরাবে তার প্রগতি ও কৃষ্টির মৃত্যু ও ক্ষয় অনিবার্য্য।

 আজ হিন্দু-ভারতেরও বোঝবার দিন এসেছে, যে, দেশের মুসলিম প্রজা সাধারণের মাঝে এই যে আধুনিক শিক্ষা দীক্ষা ও সংস্কৃতির অভাব, ভারতের পক্ষে এর চেয়ে অকল্যাণের দ্বার— অশিবের গোমুখী উৎস আর কিছুই নাই। গণ-চৈতন্য হচ্ছে সহজেই মূক, স্বভাবতঃই অন্ধ ও পশু-ধর্ম্মী; শাসক সম্প্রদায় ও দেশবাসী যদি সে মূঢ় মূক মনকে শিক্ষায় দীক্ষায় চেতন, সংস্কৃত ও উদার করে না নিতে পারেন ত’ হ’লে এই সঙ্কীর্ণ স্বার্থ—দুষ্ট অন্ধ পশু-মন ভাবী যুক্ত-ভারতের সব পরিকল্পনা সব গঠনই বার বার নষ্ট করে দেবে।

 ধর্ম্মান্ধ ভারত, তা’ হিন্দুই হোক আর মুসলমানই হোক, সে যত দিন সম্প্রদায়িকতার ধর্ম্মকে জাতীয় জীবন থেকে দূরে ব্যক্তিগত জীবনের পরিধির মাঝে না রাখতে শিখবে, দেশের রাজনীতিকে এই ধর্ম্মান্ধতা রাহুর গ্রাস থেকে মুক্ত করতে না পারবে, তত দিন

৯২