ভারত কোন্ পথে?
থেকে, গুরুকূল ও আশ্রম-মার্কা জাতীয় শিক্ষা, অসহযোগ মার্কা সহযোগিতা, ত্রেতা ও দ্বাপর যুগের হাতিয়ার নিয়ে শিল্পোদ্ধার সবই আমরা করি আনাড়ীর মত। ফলে প্রত্যেকটি সমস্যা যেমন সঙ্গীন ছিল তেমনিই থেকে যায়, কংগ্রেস করেন তাকে ঘিরে শুধু নর্ত্তন কুর্দ্দন, শুধু বক্তৃতা, শুধু প্রস্তাব পাশ; বড় জোর একটা লোক-দেখানো চমকপ্রদ demonstration; এ যাবৎ আমাদের কাজের ছকের সঙ্গে উপবাস, প্রার্থনা, হরতাল, করতালি, নিরামিষ আহার, খদ্দর পরিধান, পাইখানা পরিষ্কার ইত্যাদি নানা অপূর্ব্ব উপাদান জগা খিচুড়ি হয়ে মিশে এক অপূর্ব্ব পদার্থ সৃষ্টি করেছে। দেশের সঙ্গীন অর্থ সমস্যা, শিক্ষা সমস্যা, স্বাস্থ্য সমস্যা, সমাজ সমস্যা, এবং সত্যকার খাঁটি রাজনীতিক দীক্ষা সবই এই জগাখিচুড়ীর জটিলতায় ব্যর্থ ও নিস্ফলা হয়ে আছে।
অতিমাত্রায় রাজনীতিকতাও আমাদের বিস্মৃত করিয়ে দিয়েছে, যে, জীবনটা শুধু রাজনীতি নয়। যে ভারতে শতকরা নব্বই জন কান যুগেই উদর পূর্ত্তি করে দুবেলা আহার পায় নাই, সে ভারতে নিছক রাজনীতিক স্বরাজে এ জাতীর দৈন্যের কোনও কিনারাই হবে না। সে রকম রাজনীতিক স্বরাজ মুষ্টিমেয় ভদ্রলোকের করবে গতি, যাদের পেশা রাজনীতিক আন্দোলন তাঁদের মেলাবে মোটা মোটা চাকুরী ও পদমর্য্যাদা। চাকুরী-লোভীদের চিৎকারই এই জাতীয় স্বরাজ আন্দোলনের বার আনা। জাতির জীবনের মানযন্ত্রে যারা চিরদিন life-line বা জীবন-রেখার নীচে মৃত্যুরেখার কাছাকাছি পড়ে আছে তাদের বাঁচবার উপায় কোন দেশেই নিছক রাজনীতিক স্বরাজের দ্বারা হয় নাই, হয়েছে গঠনের কাজে, বিশেষ আন্দোলন ও বিধি বা legislation এর চাপে।
৯৮