বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:ভারত কোন্‌ পথে? – বারীন্দ্রকুমার ঘোষ (১৯৩৬).pdf/১০৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

গঠনের অন্তরায়

দেশের যারা মধ্যবিত্ত তাদেরও জীবন দৈন্যরেখা ঘেঁসে চলে, তারা রোজ আনে রোজ খায়, আধিব্যাধি অপঘাত ও মৃত্যুর জন্য কোন উদ্বৃত্তই তাদের জমার খাতে পড়ে না। তাই রামচন্দ্র যখন রাজা হন তখন বানরের ভাগ্যেই পড়ে দু’ একটা কদলী মাত্র, সুগ্রীব হনুমান জাম্বুবানই আপোসে রাজ-প্রসাদ করে নেয় ভাগবাঁটোয়ারা।

 চাষী পড়ে থাকে তার দৈন্য ও ঋণের আঁস্তাকুড়ে; শ্রমজীবিরা অবহেলার বস্তিতে বস্তিতে গড়ে চলে তাদের ভাঙা চোরা বিশৃঙ্খল ইউনিয়ন; ম্যালেরিয়া কচুরীপানা দুর্ভিক্ষ মহামারী বেড়ে চলে চক্রবৃদ্ধির হারে ছারপোকার বংশের অনুপাতে। তার সঙ্গে মহা জাঁকজমকে চলে কংগ্রেসের নেতাদের ধ্বজপতাকাময় জয়যাত্রার সাজানো রথ—চরকা ও দুর্মূল্য খদ্দরের তালে তালে। সমস্যাগুলির সমাধান যতটুকু হয় তা করবার জন্য আছে কেবল ঐ দেশবর্জ্জিত সয়তানী বিদেশী গভর্ণমেণ্ট। আমরা তার কৃষি-ঋণ বিল, তার কচুরীপানা ধ্বংস বিল, তার পূর্ত্ত বিভাগ, তার শিল্প গঠন প্রচেষ্টা, তার বেকার সমস্যা সমাধানকে মনের আনন্দে গালি পাড়ি কিন্তু তাকে কার্য্যকরী করবার জন্য সাহায্য মাত্র করি না, কারণ পাছে সেগুলি কার্য্যকরী হলে গভর্ণমেণ্টের প্রেষ্টিজ যায় বেড়ে কংগ্রেসের প্রেষ্টিজ যায় কমে।

 দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাসের প্রাণ সত্য সত্যই দেশের জন্য কেঁদেছিল, মহাত্মাজীও জীবনপণ করেছেন দলিতোদ্ধারে, কুটীর শিল্পোন্নতিতে, জাতির আত্মশুদ্ধির মহাযজ্ঞে, কিন্তু তাঁদের সহুরে ইংরাজিনবীশ কর্ম্মীদের আর দরিদ্র দেশবাসীর মাঝে আছে এক বিরাট ব্যবধান। সে ব্যবধান বা প্রাচীর হচ্ছে এক দিকে অজ্ঞান ও অন্য দিকে

৯৯