বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:ভারত কোন্‌ পথে? – বারীন্দ্রকুমার ঘোষ (১৯৩৬).pdf/২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

হিংসা আমাদের পক্ষে পরধর্ম্ম

গতি লক্ষ্য করলে দেখবে ভারতের গতি অন্যরূপ, মানুষের মধ্যে মহান যা’ উদার যা’ নিঃস্বার্থ যা’—নররক্তে পারী নগরীর পথ পঙ্কিল করে ফরাসী বিপ্লব যে সাম্য মৈত্রী স্বাধীনতার বাণী সফল করতে পারে নাই, সেই মহান উদার মন্ত্র এই দেশে সফল হবে বলেই এই দেশমাতা রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ দেশবন্ধু শ্রীঅরবিন্দের জননী। আমরা রাগের কথা অনেক শুনেছি; জাতি-বিদ্বেষ জাগাতে গিয়ে আজ ভারতে হিন্দু মুসলমানে, ব্রাহ্মণ-অন্তজে, স্পৃশ্যে অস্পৃশ্যে, জাতি ও ধর্ম্মবিদ্বেষের গরল ফেণিয়ে তুলেছি। ভগবানের অঙ্গুলি জাতির অন্তরদেবতার সঙ্কেতে তাই দেখাচ্ছে এ পথ ভারতের নয়। আমাদের প্রকৃত শক্তির ঘর হচ্ছে সেইখানে যেখানে স্পর্শ করে দশ শিখ গুরু বনের চাষাকে বীর জাতিতে পরিণত করেছিল। আমরা দৈবী বলের ও অমৃতের সন্তান, পশুবলের নয়। আজ তাই আমি ইতিহাসের পাতা খুলে যুক্তির ফলকে কষে দেখাব কোন্ পথে আমাদের মুক্তি, অন্ততঃ কোন্ পথে আমাদের মুক্তি নয়।

হিংসা আমাদের পক্ষে পরধর্ম্ম

 এত দিন মানুষ গুণ্ডামীকে বীরত্ব বলে ভুল করেছে, যে যত বেশি মানুষের ছিন্ন মুণ্ড নিয়ে গেণ্ডুয়া খেলতে পেরেছে, সেই ছিল তত বড় বীর। তথাকথিত বীর জাপান একবার কোরিয়া দেশ জয় করে বিজিতের লক্ষ লক্ষ ছিন্ন কর্ণ নিয়ে একটি উচ্চ জয়স্তম্ভ রচনা করেছিল। সিরাজুদ্দৌলার নামে প্রচলিত ঐতিহাসিক কিম্বদন্তী—ঐ অন্ধকূপ হত্যার চেয়ে বৌদ্ধ জাপানের এই ক্রুর নিষ্ঠুরতা—এই সামুরাই শৌর্য্য কত ভীষণ। দেবতার প্রতীক স্বরূপ মানুষের পক্ষে এই পশু ও পিশাচ স্তরে নামবার অছিলা মানুষ ধর্ম্মের নামে, জাতির নামে, দেশ ও জাতিগর্ব্বের নামে চিরদিন জুগিয়ে এসেছে। দেশে দেশে আমাদের কবিরা, চারণরা, পুরাণকারেরা

১৫