বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:ভারত কোন্‌ পথে? – বারীন্দ্রকুমার ঘোষ (১৯৩৬).pdf/৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ভারত কোন্ পথে?

আপন জীবনে ফলিয়ে নেয়। সোশালিষ্ট না হয়েও ইংলণ্ড আজ অনেকখানি সমাজতান্ত্রিক হয়েছে, তাদের দেশের শ্রমজীবি ও চাষীরা অনেক অধিকার বৈধ আন্দোলনের পথেই লাভ করেছে। এই হিসাবী স্থিতধী জাতির সাহচর্য্য পেয়ে আমরা তাকে শত্রু ভাবেই এত দিন ব্যবহার করেছি, তাতেও ভারত কম লাভবান হয় নাই। আজ প্রাচ্য জাপান বা মুসলমান বা ইতালী দেশের শাসক হলে আমাদের মুক্তি অভিযান এতখানি নিষ্কণ্টক তো হ’তোই না, অধিকন্তু নির্ম্মম দলনে তোপের মুখে ওরা তা’ নিশ্চিহ্ন করে দিত। ইংরাজ মুক্তির দূত, যেখানে যায় সজ্ঞানে হোক অজ্ঞানে হোক মুক্তির বীজ বপন করে; তাই আজ অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যাণ্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা ও আয়লর্ণ্ড ও স্বাধীন, মিশর এবং ভারত ও স্বাধীনতার পথে দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে। আমরা জাতীয়তার কুজ্ঝটিকায় অন্ধ নেতার মুখে ইংরাজের অনেক অপগুণের কথা শুনেছি, তাদের চরিত্রের অন্য দিকটাও আমাদের বোঝা ও শোনা উচিৎ; তবেই করতে পারবো নিরপেক্ষ বিচার, তবেই বেছে নিতে পারবো দেশের জন্য সহজ ঋজু আশুফলপ্রদ কল্যাণের পথ।

ব্রিটেন ভারতের কি করেছে?

 ভারতবর্ষ আজ যে ব্রিটেনের অধীনতা পাশে বদ্ধ হয়েছে, বহিঃশক্তির কাছে তার এই প্রথম পরাজয় ও পরাধীনতা নয়। শক, হুন, গ্রীক, পাঠান, মোগল, ওলন্দাজ, পর্ত্তুগীজ, ফরাসী ইত্যাদি বহু যোদ্ধ জাতি এসে তরঙ্গের পর তরঙ্গে দেশের উপর দিয়ে বন্যার জলের মত বয়ে গেছে। বন্যার পলি মাটির মতই তারা তাদের জীবনী-শক্তি, কৃষ্টি, সভ্যতা দিয়ে এদেশের প্রাণ ও মনকে পুষ্ট করেছে। ওদেরই মত ব্রিটিশ-সংস্পর্শ অজ্ঞানে বা সজ্ঞানে ভারতকে কি দিয়েছে, তার জীবনের পূর্ণ সিদ্ধির কতখানি

২৪