ভারত কোন্ পথে?
মহাব্রত তার চেয়ে বহুগুণে গুরুতর। তাই নিগ্রো-আফ্রিকা ও রেডইণ্ডিয়ান্ আমেরিকাকে মুছে ফেলে সে সব জাতিকে উৎসন্ন করে ঐ দুই মহাদেশে নূতন উপনিবেশ নবতর শ্বেত সাম্রাজ্য গড়া সম্ভব হয়েছিল। কিন্তু মানব সভ্যতার উদয়াচল এই ভারতকে তেমন করে মুছে গড়া সম্ভব হয় নাই, তা’ হবার কথাও নয়। তাকে নূতন প্রাণধারায় সচেতন ও সঞ্জীবিত করে ভারতের মনে এক নূতন চিন্তা, অভিনব দৃষ্টি খুলে দেওয়া আবশ্যক হয়েছিল, তা’ না হলে আধুনিক জগতে ভারত তার নির্দ্দিষ্ট আসন কেমন করে লাভ করবে? ভারতের সেই রূপান্তর সেই নবদীক্ষা এখনও চলেছে, এখনও সম্পূর্ণ হয় নাই; যত দিন সে কাজ পূর্ণ না হবে তত দিন কোন শক্তিই ইংলণ্ডকে ভারতের অদৃষ্টের ও গঠনের নিয়ন্তার আসন থেকে চ্যুত করতে পারবে না। একথা ইংলণ্ড ও ব্রিটিশ জাতির তোষামোদ নয়, ইহা ইতিহাসের কঠিন সত্য। জাতির অর্ন্তদেবতার হাতের নির্দিষ্ট অস্ত্র ও উপকরণ হচ্ছে ইংরাজ ও ভারতবাসী, এখানে ভূয়া ভাবপ্রবণতার বা উচ্ছাসের স্থান নাই। উজ্জ্বল গরীমাময় এক ভবিষ্যতের জন্য চলেছে সারা জগৎ জুড়ে নিঃশব্দ বিপুল আয়োজন,—কত না জাতির মিলন ও বিরোধের মধ্য দিয়ে, কত বিজয় ও পরাজয়, উত্থান ও পতনের আবর্ত্তনে।
আজ কাল আমরা এক দেশের দ্বারা বা এক জাতির দ্বারা অন্য দেশের ও অন্য জাতির শোষণের কথা প্রায়ই শুনতে পাই। ন্যাশনালিষ্ট দল উচ্চ কণ্ঠে ঘোষণা করেন, যে, অসভ্য আফ্রিকা ও আমেরিকার অতুল ধনরত্ন লুণ্ঠনের ফলে গড়ে উঠেছে ঘুরোপের আধুনিক বৈশ্য সভ্যতা ও সম্পদ। ভারতের শিখ মরাঠা ও মোগলের দুর্ব্বল হস্ত থেকে ছিনিয়ে নেওয়া অর্থ দিয়ে গড়ে উঠেছে ইংলণ্ডের অর্দ্ধ পৃথিবীব্যাপী সাম্রাজ্য ও বাণিজ্য প্রভাব।
২৮