সন্ত্রাশবাদের জন্মকথা
অধিকার দীর্ঘকাল ভোগ করতে পেলে স্বভাবতঃই তার চরিত্র হয়ে পড়ে গর্ব্বিত অনমনীয় ও বেদরদী, এত বড় জাতির অদৃষ্টের অপ্রতিদ্বন্দ্বী নিয়ামকত্ব যারা দেড় শ’ বছর অবাধে নির্ব্বিবাদে ভোগ করেছে তাদের সে কার্য্য যে অভ্যাসে দাঁড়িয়ে স্বভাবগত হয়ে যায়। এই জাতির ও সমাজের অপ্রতিদ্বন্দ্বী নেতৃত্ব কোন এক যুগে ভারত এই ভাবে ব্রাহ্মণকে দিয়েছিল, তার কি বিষময় ফল ফলেছে আমরা তা’ জানি; প্রভুত্বের মদগর্ব্বে তপোবল হারিয়ে তারা দেশের কোটী কোটী সন্তানকে জাত্যভিমানের শিক্ষা দীক্ষা সংস্কার থেকে বঞ্চিত করে মূঢ় পশুর স্তরে নামিয়ে দিয়েছিল। সমগ্র মানব জাতির ইতিহাসে এত বড় হীন ক্রুর অত্যাচার আর কখনও অনুষ্ঠিত হয় নাই। কোটী কোটী ভারতবাসীর আত্মার এই অধোগতির চেয়ে রাজনীতিক পরাধীনতা তুচ্ছ ব্যাপার। রাজনীতিক সাতন্ত্র্য হারিয়েও আমরা বেঁচে আছি এবং বেঁচে থাকতে পারি; পরাধীন অবস্থায়ও আমরা বড় বড় মনীষীর জন্ম দিয়েছি; কিন্তু মুষ্টিমের উচ্চবর্ণের অত্যাচারে দেশের শতকরা নব্বই জন নারী ও শূদ্র একেবারে অমানুষ হয়ে গেছে; তার ফলে দুর্ব্বল সংহতিহীন ভারত বার বার একতাবদ্ধ দুর্দ্ধর্য বহিঃশক্তির কাছে পরাস্ত হয়েছে। পরবর্ত্তী যুগে ভারতের শাসক-সম্প্রদায় এই শ্বেত জাতিরা যেমন নিজেদের শ্রেষ্ঠত্বের অহঙ্কারে স্ফীত হয়ে দেশের মঙ্গল উপেক্ষা করেছিল, অতীতে দেশের শ্রেষ্ঠ বর্ণরাও তপোবল হারিয়ে সূত্রসর্ব্বস্ব ব্রাহ্মণত্বের গর্ব্বে দেশকে তেমনি এবং ততোধিক অধোগতি পাইয়েছিল এবং নিজেরাও অমানুষ হয়ে গিয়েছিল।
যে যুগান্তরের যুগের কথা আমি বলছি তখন ভারতের শাসকসম্প্রদায় ও আই সি এস্ দল দেশের রাজনীতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষার দিকে
৪১