সন্ত্রাশবাদের জন্মকথা
ইন্ধন জোগাতেন কিন্তু জাতির বুকের এ আগুন কোন্ পথে চালিত করলে কল্যাণ হবে তা’ তাঁরা জানতেন না। তাঁদের মনে স্বরাজ বা ফেডারেটেড্ ইণ্ডিয়া—অখণ্ড মহান যুক্ত-ভারতের কোন চিত্রই ছিল না, বক্তৃতার উচ্ছাসে ঔপনিবেশিক স্বায়ত্ত্ব শাসনের নাম তাঁরা করলেও সে আশা পূরণের উপযোগী কোন বৈধ আন্দোলন তাঁরা দেশে সৃষ্টি করতে পারেন নাই। তাঁদের সে বক্তৃতার আতসবাজীতে কি দেশবাসী আর কি ভারত সরকার কেহই কর্ণপাত করতেন না। বিলাতের পার্লামেণ্টে কমন্স সভায় ভারতের সম্বন্ধে আলোচনা কালে মেম্বারদের তা’ নিদ্রাকর্ষণ করতো মাত্র; সুরেন্দ্র নাথের ওজস্বিনী বক্তৃতা শিক্ষিত শ্রোতার কর্ণকুহর তৃপ্ত করেই ফুরিয়ে যেত।
জাতির বুকের এই অশান্তি, এই আত্ম-প্রকাশের ক্ষুধা, এই পুঞ্জীভূত বেদনা কোনও সহজ মুক্ত কল্যাণকর পথ না পেয়ে অগত্যা অন্ধ রাগ ও দ্বেষে পরিণত হবে, বাঁকা গোপন গতি নেবে, তাতে আর আশ্চর্য্য কি? নাবিকহীন তরণী যেমন কর্ণধার বিনা আবর্ত্তে পড়ে বিপথগামী হয়, পিতা মাতার শিক্ষার দোষে সন্তান যেমন কুপথে গিয়ে সকলকে বিপন্ন করে ও নিজেও বিপন্ন হয়, তেমনি জাতিও প্রকৃত নেতার অভাবে বিকৃতি ও অকল্যাণের মাঝে গিয়ে আত্মঘাতী হয়। কর্ণধারহীন ভারতের এই অতৃপ্ত রাজনীতিক ক্ষুধা তাকে তার স্বধর্ম্মের বিপরীত দিকে নিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তা’ হলেও আমাদের “যুগান্তর” বোমাকে স্বরাজ লাভের উপায় বলে কখন প্রচার করে নাই, “যুগান্তর” কখনও লেখে নাই, যে, গুপ্ত হত্যায় দেশের মুক্তি আনবে! “যুগান্তর” ছিল অকপট বিপ্লবাত্মক পত্রিকা, সে বলতো ব্যাপক বিদ্রোহের কথা,
৪৩