বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:ভারত কোন্‌ পথে? – বারীন্দ্রকুমার ঘোষ (১৯৩৬).pdf/৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

সোভিয়েটতন্দ্র কি বিশ্বব্যাপী গণ-আন্দোলন?

ক্ষত এক জায়গায় পচা ঘায়ে জেগে ওঠায় মানুষের বিস্মিত দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। এই পুঞ্জীভূত দৈন্য ও অবনতি, সমাজ শরীরের এই উৎকট দুষ্ট ক্ষত জোয়াহির লালজীর মত মধ্যবিত্ত শিক্ষিতের শুপ্ত বিবেককে কষাঘাতে জাগিয়ে তুলেছে; কারণ জগতের যত আর্ত্তত্রাণের মহা যজ্ঞে এই মধ্যবিত্ত ও ধনীরাই চির দিন জুগিয়েছে ঋত্বিক। তারাই শতে শতে সহস্রে সহস্রে সোভিয়েটের রক্ত পতাকা তলে সমবেত হচ্ছে, তারাই দিচ্ছে মূক গণশক্তির মুখে বাণী, তাদের কুসংস্কারান্ধ অসাড় চক্ষে দৃষ্টি। এ ব্রত কি তাদের উদযাপিত হবে? শূদ্র কি এবার সত্য সত্যই জাগবে? লক্ষ বৎসরের শিক্ষায় দীক্ষায় বঞ্চিত অসংস্কৃত মূঢ় তাদের প্রাণে স্ফুরিত হবে কি মনীষা, তেজ, ধৈর্য্য? এত বড় সংস্কার কি এক পুরুষে হ’য়? এত দিনের অশিক্ষিত নারীকে শিক্ষা সাহচর্য্য দিয়েও এখনও কি আমরা পেরেছি তার মাঝে পূর্ণ নারীত্বের মহীয়সী প্রতিমাকে জাগাতে? সুতরাং এই লাল-ঝণ্ডা বহুদিন শিক্ষিত মধ্যবিত্তকেই বইতে হবে, এই শূদ্র-সংস্কার যজ্ঞের অগ্নিকে তাকেই রাখতে হবে অনির্ব্বাণ শিখায় জ্বালিয়ে, যাবৎ আমাদেরই সৃষ্ট অমানুষ মানুষ না হয়; অশিক্ষিত অসংস্কৃত কখনও সভ্যতার পতাকা উত্তোলিত রাখতে পারে না। সে শক্তি ও ধৈর্য্য তার বাহুতে নাই।

 ধনিকতন্ত্র ভাল হৌক মন্দ হৌক, যুগ যুগান্তের কলা সাহিত্য কৃষ্টির দ্বারা পুষ্ট সে ভাবধারা নবতর মহত্তর ব্যাপকতর ভাবধারায়ই রূপান্তরিত হতে পারে। তাকে বলের দ্বারা নষ্ট করে লাভ নাই, মানুষের মন কখনও অসির দ্বারা জয় করা যায় না। বঞ্চিত মধ্যবিত্ত ও মূক শূদ্র এই দুই মহাশক্তি যদি এক হয়, ত।’ হ’লেই মানুষের সংঘবদ্ধ লোভের এই শোষণ-যন্ত্র একদিন অচল হতে পারে, মানুষের মুক্তির দিন আসন্ন হতে পারে। সে অসাধ্য-সাধন সম্ভব করতে হ’লে

৮৩