পাতা:ভারত পথিক - সুভাষ চন্দ্র বসু.pdf/১২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

আড়ালে থাকে ততক্ষণই তার চোটপাট। আলোতে যখনি তাকে টেনে আনে তখনি সে ধেয়ে পালায়।

আত্মবিশ্লেষণের প্রথম প্রয়োেগ হল কতকগুলি স্বপ্নের উপদ্রবের হাত থেকে আত্মরক্ষার জন্য। এ জাতের স্বপ্নের বিরুদ্ধে আমার আগেকার লড়াইও বিফল হয়নি, তবে আত্মবিশ্লেষণের মধ্য দিয়ে সাফল্য এল আরো সহজে, আরো সম্পূর্ণ করে। প্রথম দিকে যেসব অপ্রিয় স্বপ্ন দেখতাম তার মধ্যে প্রধান ছিল সাপ ও বন্য জন্তুর স্বপ্ন। সাপের স্বপ্নের হাত থেকে বাঁচবার জন্য রাত্রে ঘুমোনার আগে কল্পনা করতাম যে আমার চারিদিকে অসংখ্য সাপ কিলবিল করছে এবং মনে মনে আবৃত্তি করতাম: ‘আমি সাপের ভয় করি না, মত্যুর ভয় করি না’। এই চিন্তার মধ্যে সাধারণত ঘুমিয়ে পড়তাম। কয়েকদিন অভ্যাসের পরই পরিবর্তন টের পাওয়া গেল। সাপের দেখা মিলতো কিন্তু ভয় হত না। ক্রমে ক্রমে সাপও বিদায় নিল। অন্যান্য জন্ত‌ুর স্বপ্নও এই চিকিৎসায় ধীরে ধীরে কেটে গেল। তারপর থেকে আৱ এ বিপদে পড়তে হয়নি। কলেজ থেকে বহিষ্কারের সময়ে স্বপ্ন দেখতাম তল্লাসীর আর গ্রেপ্তারের—অবশ্যই আমার অবচেতন ভাবনা চিন্তা ও গোপন আশস্কার প্রকাশ। কিন্তু কয়েকদিন মানসিক ব্যায়ামের পর এ রোগও সেরে গেল। তল্লাসী আর গ্রেপ্তার চলছে, আমি তাতে বিন্দুমাত্র বিচলিত হচ্ছি না, হব না, এই চিন্তাই রোগ সারাবার পক্ষে যথেষ্ট হত।

আরেক জাতের স্বপ্নের উপদ্রব ছিল সে হচ্ছে যে পৱীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেই বা যার ফল খারাপ হয়েছে তার সম্বন্ধে স্বপ্ন। এগুলিকে সামলাবার জন্য অনবরত জপ করতে হত যে, পরীক্ষার জন্য আমি প্রস্তুত, পাশ করবই, ইত্যাদি। আমি এমন বহ‍ুলোককে জানি যাঁরা

১১০