পাতা:ভারত পথিক - সুভাষ চন্দ্র বসু.pdf/১৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

নবম পরিচ্ছেদ

কেম্বিজে

যখন ভারতবর্ষ ছাড়ি তার কিছুদিন আগেই জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকাণ্ড অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু পাঞ্জাবের বাইরে তার খবর প্রায় পৌঁছয়নি, কারণ গোটা পাঞ্জাব তখন সামরিক আইনের কবলে, খবরাখবরের ব্যাপারে প্রবল কড়াকড়ি। সুতরাং লাহোর ও অমৃতসরে নানা ভয়াবহ ঘটনার ভাসা ভাসা গুজবমাত্র আমাদের কানে এসেছিল। আমার এক সিমলাবাসী ভায়ের মুখে শুনেছিলাম পাঞ্জাবের ঘটনার, ও ইংরেজ-আফগান যুদ্ধে ইংরেজের পরাজয়ের কথা। কিন্তু এ সমস্তই ছিল গুজব, মোটের উপর উত্তর-পশ্চিম ভারত সম্বন্ধে সাধারণ ছিল অজ্ঞ। সম্পূর্ণ নিশ্চিন্ত মন নিয়ে য়ুরোপ মাত্রা করলাম।

জাহাজে অনেক ভাৱতীয়ের সঙ্গে পরিচয় হল, তাদের মধ্যে অধিকাংশই ছাত্র। সুতরাং সকলে মিলে একটু স্বাচ্ছন্দ্যে থাকবার জন্য একটা আলাদা টেবিলে বসা স্থির করলাম। আমাদের টেবিলে নেতৃত্ব করতেন এক আই. সি. এস, অফিসারের বিধবা, বয়স্কা পত্নী। জাহাজের অধিকাংশ যাত্রীই ছিলেন রোদে-পোড়া উঁচ‍্কপালে ইংরেজ। তাদের সঙ্গে মেলামেশা ছিল প্রায় অসম্ভব, তাই আমরা ভারতীয়েরা একত্র ঘেষাঘেষি করে থাকতাম। এটা-সেটা নিয়ে প্রায়ই ইংরেজ-ভারতীয়ে ঠোকাঠুকি লাগত, এবং শেষ পর্যন্ত যদিও ব্যাপার

১২১