পাতা:ভারত পথিক - সুভাষ চন্দ্র বসু.pdf/১৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

সার্ভিস পরীক্ষার জন্য। অবসর-বিনোদনের জন্য ইণ্ডিয়ান মজলিস ও ইউনিয়ন সোসাইটির সভায় যেতাম।

যুদ্ধোত্তর কেম্ব‌্রিজের মনোভাব ছিল নিতান্ত গোঁড়া। অক্সফোর্ড সবেমাত্র উদারনৈতিক হতে শুরু করেছে। আবহাওয়ার রকম সহজেই বোঝা যেত প্যাসিফিস্ট, সোশ্যালিস্ট, কনসিয়েন্সস অবজেক‍্টরস প্রভৃতির প্রতি ছাত্রদের অভ্যর্থনায়। কেম্ব‌্রিজে কোনো সভাসমিতি করে বক্ত‌ৃতা দেওয়া তাদের পক্ষে ছিল অসম্ভব। আণ্ডার-গ্র্যাজুয়েটরা এসে মিটিং ভেঙে দিত, বক্তামশাইকে ময়দা দিয়ে স্নান করাত, জলে চোবাত। এই ‘র‍্যাগিং’ ছিল আল্ডার-গ্র্যাজুয়েটদের আমোদ-প্রমোদের অন্তর্গত, আমার তাতে যথেষ্ট সমর্থন ছিল। কিন্তু বক্তার সঙ্গে মত মেলে না বলেই মিটিং ভেঙে ফেলা আমি সমর্থন করতে পারতাম না। আমার মতো বিদেশীকে যে জিনিসটা মুগ্ধ করেছিল সেটা হচ্ছে ছাত্রদের স্বাধীনতা ও সম্মান। এই সম্মানের প্রভাব ছাত্রদের চরিত্রে গভীরভাবে পড়ত। পুলিশ-বোঝাই কলকাতা শহরে সন্দেহভাজন ভাবী বিপ্লবীদের অষস্থা থেকে কী পরিবর্তন! কেম্ব‌্রিজের আবহাওয়ায় বাস করে প্রেসিডেন্সি কলেজের ঘটনা কল্পনা করাও দুঃসাধ্য কারণ এখানে অধ্যাপক ছাত্রের উপর অত্যাচার করা দূরে থাকুক, আল্ডারগ্র্যাজুয়েটদেরই অধ্যাপকদের উপর অত্যাচার করার সম্ভাবনা বেশি। ‘ডন’দের মধ্যে যাঁদের জনপ্রিয়তা কম তাঁদের প্রায়ই আণ্ডারগ্র্যাজুয়েটদের হাতে লাঞ্ছনা ভোগ করতে হত, তাদের ঘরবাড়ি লুটপাট হত। অবশ্য এসবের মধ্যে কোনো শত্র‌ুতার ভাব ছিল না। কারণ জিনিসপত্রের ক্ষতি হলে ক্ষতিপূরণ করে দিত ছাত্রেরাই। এমন কি কেম্ব‌্রিজের রাস্তায় ঘাটে যখন এই ‘র‍্যাগিং’এর উল্লাস,

১২৫