পাতা:ভারত পথিক - সুভাষ চন্দ্র বসু.pdf/১৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

জনসাধারণের সম্পত্তি যখন ধংস হচ্ছে, তখনও পুলিশ যেমন সংযত ব্যবহার করত তেমন ভারতবর্ষে কল্পনা করা অসম্ভব।

বৃটেনে লালিত ইংরেজ সন্তানের চেয়ে কেম্ব‌্রিজে স্বাধীনতার মাত্রা দেখে আমি বেশি মুগ্ধ হব তাতে আর বিচিত্র কী! বিচিত্র যেটা লাগত সেটা হচ্ছে ছাত্রদের সম্বন্ধে চারদিকে সকলের শ্রদ্ধা এবং বিবেচনা। কেম্ব‌্রিজে প্য দেওয়া মাত্র যে কোনো নতুন ছাত্র বুঝতে পারত যে চরিত্রের ব্যবহারের অতি উচু মান তার কাছে সবাই প্রত্যাশা করছে। প্রত্যাশার চাপে ব্যবহারও সুগঠিত হত। আণ্ডারগ্র্যাজুয়েটদের প্রতি এই বিবেচনার ভাব কেবল কেম্ব‌্রিজের একচেটিয়া নয়, সারা দেশেই কমবেশি মাত্রায় এর চল ছিল। ট্রেনে কেউ জিগগেস করলে উত্তরে আপনি যখন বলবেন যে আপনি কেম্ব‌্রিজে (বা অক্সফোর্ডে) আছেন তখনই তার ধরন-ধারন বদলে যাবে। বন্ধুভাব তো আসবেই, শ্রদ্ধাবান হয়ে উঠবে। অন্তত এই আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা। অক্সফোর্ড কেম্ব‌্রিজ -ওয়ালাদের মধ্যে যেটুকু ঠাট-ঠমকের ভাব থেকে থাকে তার পক্ষপাতী আমি নই। কিন্ত‌ু পুলিশ-ঘেরা আবহাওয়া থেকে বেরিয়ে আমার এই ধারণা জন্মেছে যে ছাত্র ও তরুণদের আরো স্বাধীনতা দেওয়া, তাদের প্রতি বিবেচনার সঙ্গে ব্যবহার করার স্বপক্ষে অনেক কিছু বক্তব্য আছে।

কলকাতায় থাকতে একটি ঘটনা ঘটেছিল যা এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে। নতুন বই কেনার প্রতি আমার তখন প্রবল ঝোঁক ছিল। নতুন বই দেখবামাত্র অস্থির হয়ে উঠতাম, হাতে না পাওয়া পর্যন্ত বাড়ি ফিরতে পারতাম না। একদিন কলেজ স্ট্রিটের একটা বড় দোকানে গিয়ে দর্শনের একখানা বইএর খোঁজ করছি (তখন দর্শনের উপর খুব ঝোঁক ছিল), দামটা যখন শুনলাম তখন পকেটে হাত দিয়ে

১২৬